তুমি ফিরবে বলে’ বইটি রবের দিকে মানুষকে ফিরিয়ে আনার আকুতিভরা এক তীব্র মর্মস্পর্শী আখ্যান। এই বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ে অধ্যায়ে, প্রতিটি শব্দে শব্দে মিশে আছে পথহারা যুবকদের প্রতি ভালোবাসা মেশানো নববি দাওয়াত। আছে তাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করার আকুল আহ্বান। সদ্য গোঁফ গজানো কিশোর থেকে শুরু করে মাঝবয়েসী কোনো ভদ্রলোক এমনকি সারাজীবন সেক্যুলার জীবন যাপন করা প্রৌঢ়ের জন্যেও এই বই সমান গুরুত্ব রাখে।
Copyright © 2024 Seanpublication.com
আব্দুর রহমান –
বর্তমান সময়ে যে কয়েকটি বই আলোড়ন তুলেছে তার মধ্যে একটি অন্যতম বই হলো “তুমি ফিরবে বলে” । বইটি যুবসমাজের সমস্যাগুলো সামনে রেখেই রচিত হয়েছে। যে যুবসমাজ বর্তমানে নারী, মদ, জুয়া, পর্ণ আসক্তি সহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। “তুমি ফিরবে বলে বইতে তরুন লেখক জাকারিয়া মাসুদ কখনো গল্প, কখনো প্রবন্ধ, আবার কখনো যুক্তি ও কুরাআন হাদীসের বানী দ্বারা যুবসমাজকে আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামে ফেরার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
▶ সার-সংক্ষেপ:-
বইতে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে চৌদ্দটি লেখা স্থান পেয়েছে। সেই সাথে প্রতিটি লেখায় যোগ করেছেন অসংখ্য যুক্তি ও রেফারেন্স সমৃদ্ধ কথামালা।
বইয়ের প্রথম শিরোনাম “ফাগুন হাওয়া বয়ে যাক তোমার পরানে”। এখানে বর্ণিত হয়েছে হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত তরুন সমাজের কথা। যে তরুণ সমাজ মনে করে যে করেই হোক আমাকে প্রচুর অর্থের মালিক হতে হবে। সম্পদের পাহাড় গড়তে হবে। যাতে দিকে দিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এতেই কি সব? উত্তর হচ্ছে না। বরং প্রচুর সম্পদ আছে, অর্থ-প্রাচুর্য্যের অভাব নেই এমন অসংখ্য মানুষ আছেন যারা হতাশার সাগরে নিমজ্জিত। এমনকি কেউ কেউ আত্নহত্যা পর্যন্ত করেছেন। সুতরাং একজন মুসলমানের দুনিয়ার জীবনে চাওয়া পাওয়ার মাপকাঠি হওয়া উচিত আল্লাহর হুকুম মোতাবেক। সবকিছু হোক আখিরাত কেন্দ্রিক যেখানে আমাদের ভালো মন্দ সকল কর্মসমূহের চুড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হবে।
,
বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় “জীবন কি এসবের জন্যই”। আল্লাহ আমাদের এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন মাত্র কিছু সময়ের জন্য। দুনিয়ার জীবনে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি আল্লাহর ইবাদতের জন্য। কিন্তু ক্ষনিকের এই দুনিয়ায় এসেও যেন আমাদের চাওয়ার শেষ নেই। সম্পদ অর্জনের নেশায় মানুষ কত কিছুই না করছে। তবুও কি এসব সম্পদ আমাদের জীবনে সুখ শান্তি, সফলতা আনতে পারছে? বরং দিন দিন আমরা আরো অশান্তির কালো অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছি। সুতরাং আমাদের জীবনে শান্তির পাথেয় হতে হবে কুরআন হাদীস মোতাবেক দুনিয়ার জীবন পরিচালনা করা।
,
বইয়ের চতুর্থ অধ্যায় *Come on my brother, let us pray”। মসজিদের মুয়াজ্জিন আমাদের দৈনিক পাচবার সফলতার দিকে আহব্বান করে। কিন্তু আমরা সেই সালাতের জন্য কতটা উদাসীন তা বর্তমান সমাজের দিকে তাকালেই বুঝা যায়। সালাতের সময় আমরা বিভিন্ন বাহানা দিয়ে তা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। ইশ আমরা কতই না হতভাগা যে আল্লাহর আমরা জীবনকে আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামের পথে ব্যতীত অন্য পথে পরিচালিত করছি। অথচ আমরা আল্লাহ তায়ালা কে ডাকলেই তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দিবেন। কেননা আল্লাহ আল কুরআনে বলেছেন তোমরা আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাযত করুক। আমিন
,
“কাছে আসার সাহসী গল্প” শিরোনামটি এক অন্যরকম আবহ সৃষ্টি করবে। যেখানে বর্তমান যুব সমাজ চ্যানেল আই এর প্রান ফ্রুটো নিবেদিত কাছে আসার গল্প দেখেই অভ্যস্ত। কিন্তু সত্যিকারের কাছে আসার গল্প আমরা প্পড়তে আগ্রহী নই। সাহাবী গন ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে কত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে রাসূল (স) এর কাছে এসেছেন। সেই সাথে আল্লাহ প্রদত্ত রাসূল (স:) প্রদর্শিত ইসলামের পথে সারা জীবন অতিবাহিত করেছেন। মহিমান্বিত সেই কাছে আসার গল্পটি পড়তে হলে পড়ুন তুমি ফিরবে বলে বইটি।
,
“সময়ের ভ্রান্তিতে টলো না, লড়াইটা কখনো ভুলো না” শিরোনামের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ইসলাম নিয়ে তো বর্তমান বিশ্বে কত ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যা পৃথিবী ধ্বংসের পূর্বক্ষন পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্র চলতে থাকবে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তার মনোনীত ধর্ম ইসলাম সব ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করে সমন্বিত রেখেছেন। অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্র ধুলিস্বাত করেছেন। কারণ আল্লাহ তো মহা পরাক্রমশালী ও সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।
,
এভাবে চৌদ্দটি শিরোনামে বর্ণিত হয়েছে বর্তমান যুব সমাজের প্রতি একমাত্র শান্তির নীড় ইসলামে পরিপূর্ণভাবে ফিরে আসার উদাত্ত আহবান।
Umme Suraiya –
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
বই:তুমি ফিরবে বলে
লেখক:জাকারিয়া মাসুদ
প্রকাশনী:সমর্পন
মূল্য :২৭৫(মুদ্রিত)
★প্রাক কথন:
——————–
‘ তুমি ফিরবে বলে ” বইটি আসলে একটি চিঠি। একটি অনুপ্রেরণার চিঠি। একটি আহবান, বড় ভাই হিসাবে আজকের তরুণ প্রজন্মের প্রতি এক মমতাময় ডাক।এ ডাক ফিরে আসার। এ ডাক আল্লাহকে ভালবাসার,তার রাসূলকে ভালবাসার।
★পাঠ পর্যালোচনা ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা :
——————————————————–
বইটিতে মোট ১৫টি অধ্যায় রয়েছে। যার প্রতিটি পাতায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং বিস্তারিত আলোচনা।এছাড়াও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর। নিচে সংক্ষেপে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরা হলো-
আগেও বলেছি, এটি কোন সাধারণ বই নয়।এ এক চিঠি। যে চিঠিতে বড় ভাই তার ছোট ভাই-বোনদের সত্য জীবনের পথে ফিরে আসার কথা বলেছেন। এখানে তিনি বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন,
•আমাদের প্রতি আল্লাহর ভালবাসার কথা।
•রাসূলের ভালবাসার কথা।
•দুনিয়ার মরিচীকাময় জীবনের কথা।
•ইবাদাতের কথা।
•নিজেদের কিভাবে ধোকা দিচ্ছি সেসব কথা। ইত্যাদি।
বই থেকে সংগৃহীত একটি কথা :
———————————————
শয়তান শুধু একবার আল্লাহর নির্দেশিত সাজদা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।শুধু একবার।ব্যাস,এতেই সে অভিশপ্ত হয়েছে চিরদিনের জন্য। আল্লাহর সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে। আর তুমি?
তুমি তো দৈনিক ৩৪টা ফরজ সাজদা থেকে গুটিয়ে রাখো নিজেকে। তা হলে কে বেশি নিকৃষ্ট? শয়তান? নাকি ঐ ব্যক্তি,যে দৈনিক ৩৪টা ফরজ সাজদার বিধান লঙ্ঘন করে?
জীবনকে স্পাইসি করার সব আয়োজনই বৃথা,যদি আমরা না জানি আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি।জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য যদি কেউ আইডেন্টিফাই না করতে পারে, তাহলে দুনিয়ায় আসাটা তার জন্য মূল্যহীন।আর যদি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এমনটা করে, তবে তার জীবনটা তো ষোল আনাই মূল্যহীন।ওর জীবন আর পদ্মা পাড়ের মোটাতাজা গরুটার জীবনের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই। ঐ গরুটা Voracious Animal, আর সে Voracious Human —পার্থক্য সর্বোচ্চ এতটুকুই।
বইটি,বইটির প্রস্থচ্ছেদ, বইটির উপস্থাপনা,বাইন্ডিং, পেইজ কোয়ালিটি সবকিছুই আমার ভীষণ ভালো লেগেছে আলহামদুলিল্লাহ। বইটির লেখক ও সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা।
রিভিউ দাতা :
UMME SURAIYA
নাফিসা ইয়াসমিন –
🍂
প্রাম্ভরিকা
—————
আপন স্রস্টার গোলামি ভুলে জীবনতরীকে ভাসিয়ে দিয়েছে উদ্দেশ্যবিহীন নফসের গোলামীর জোয়ারে।
এই নফ্স অর্থাৎ প্রবৃত্তির গোলামি জন্ম দেয় একরাশ হতাশা, না পাওয়ার বেদনায় হৃদয় হয় ক্ষতবিক্ষত।
বস্তুবাদী ভোগের দুনিয়া আদম সন্তানকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয় পুরোপুরি, সে শুধু শেখে ভোগের সংজ্ঞা।ভোগের নেশায় ছুটতে ছুটতে ভুলে যায় জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য।
তাই, সারাজীবন সম্পদ আর বিলাসিতায় ডুবে থেকেও একদিন তার মনেহয় কি যেন নেই জীবনে!তারপর হৃদয়কোণে জমে থাকা শূন্যতাটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
এই অপূর্ণতা আপন রবের কাছ থেকে দূরে থাকার, আল্লাহকে বাদ দিয়ে এই ক্ষনস্থায়ী দুনিয়ার পূজা করার।
তাই, ফিরতে হবে আলোর পথে।আপন রবের নিকট।
দুনিয়ার মোহ ছেড়ে রবের দিকে প্রত্যাবর্তনের, ক্ষণিকের পরিবর্তে শাশ্বত চিরন্তন জীবন বেছে নেওয়ার গল্প বলে “তুমি ফিরবে বলে”….!
ফিরে আসার আহ্বান সত্যের মিলনমেলায়, ইসলামের সুনিবিড় ছায়াতলে !
📖 বই-আলাপন 📖
———————————-
লেখক জাকারিয়া মাসুদ বইটিকে বিভিন্ন আকর্ষনীয় শিরোনামে বিভক্ত করেছেন ১৫টি অধ্যায়ে। প্রতিটি অধ্যায়ে তিনি পাঠকদের আহ্বান জানিয়েছেন রবের দিকে ফিরে আসার যারা বেখেয়ালি পথ হেঁটে চলেছে উদভ্রান্ত পথিকের ন্যায়।
🔵প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম মুগ্ধতা বয়ে নিয়ে আসে
“ফাগুন হাওয়া বয়ে যাক তোমার প্রাণে:-
দুনিয়ার মোহে মাতাল হয়ে ক্ষণিকের কুটিরে আশ্রয় খুঁজি। ক্যারিয়ার গার্লফ্রেন্ড, যশ, অর্থ, এতো এতো প্রতিপত্তির মাঝেও বেলাশেষে ফিরি হতাশ, উদ্বিগ্ন হয়ে!
অথচ একাকীত্বের মূলোৎপাটন তো একমাত্র এক আল্লাহর স্মরণেই সম্ভব।হৃদয়ের স্রস্টা এভাবেই সেট-আপ করেছেন তাঁর বান্দার হৃদয় কুঠুরিকে।অন্তর প্রশান্ত হয় রবের নৈকট্যলাভে।
⭕️দ্বিতীয় অধ্যায়ে এসে প্রথম যে প্রশ্নটা অন্তরে ধাক্কা দেয় তা হল, আসলে জীবনের উদ্দেশ্য কী?বেঁচে থাকার লক্ষ্যই বা কি? সফলতা কিসে আসে?
পপুলারিটি, ফ্যান ফলোয়িং আইফোন, রোলেক্স, মার্সিডিজ —-সবকিছুই ড্রাগের মত ক্ষনিকের উত্তেজনা দেয়, আত্মিক তৃপ্তি দিতে ব্যর্থ।
⭕️তৃতীয় অধ্যায় জুড়ে গল্প রয়েছে,এক জীবন্ত কিংবদন্তির। নবীজির অত্যন্ত প্রিয় এক সাহাবী মুসআব রাঃ।
যাঁর অন্তরে আল্লাহর ও রাসূলের প্রতি ভালোবাসা এমনভাবে গেঁথে গিয়েছিল যে তিনি এক নিমিষে দুনিয়ার অভিজাত্য ছেড়ে বেছে নিয়েছেন কন্টাকীর্ণ পথ ,রাসূলের আনুগত্যের পথ। শত অত্যাচার তাঁকে দমাতে পারেনি এই পথ থেকে।
⭕️চতুর্থ অধ্যায়
Come on my brother, let us pray:-
গার্লফ্রেন্ডের সাথে চ্যাট করতে করতে হারাম রিলেশনে ডুবে কোনদিক দিয়ে রাত গড়িয়ে ফজরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায় টের পায়না আগামী প্রজন্ম।
অথচ একজন সবার অলক্ষ্যে অপেক্ষায় থাকে শয়তানের ব্যূহ ছিন্ন করে তার দিকে ফিরে আসার। তিনি আর কেউ নন, আমাদের রব মহান রাব্বুল আলামীন। অন্তর কখনো প্রশান্ত হবেনা যদি রাহমানের সাজদায় মাথা না নোয়াতে পারো।
⭕️পঞ্চম অধ্যায়
কাছে আসার সাহসী গল্প শিরোনামে অনাবিল সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আর অএকজন রবের প্রেমিক ।
যার পিতৃপুরুষ অগ্নিপূজারী। যিনি সারাজীবন ধরে আল্লাহকে খুঁজেছেন।
সত্যকে খুঁজতে খুঁজতে মাইলের পর মাইল আর কত বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে দ্বীন ইসলামের পতাকাতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
⭕️চমকানো মেঘ যেন চমকায় অবিরাম:-
বর্তমান প্রজন্ম রোল মডেল বানায় দুনিয়ার কোন তারকাকে যে কিনা নিজেই জাহেলিয়াতে নিমজ্জিত।
অথচ চোদ্দশো বছর আগে মহান রাব্বুল আলামীন পাঠিয়েছিলেন এক মহামানকে পৃথিবীর বুকে রহমত-স্বররূপ।তিনি ছিলেন সমগ্র মানবজাতির জন্য এক বিরাট রহমত, অনুপ্রেরণা এবং মুক্তির পথপ্রদর্শক।
⭕️আঁধার ছাড়ায়ে যাব হারায়ে সঙ্গে তোমার লয়ে:-
আজ যাদের সঙ্গে গড্ডলিকায় গা ভাসিয়েছো, আমোদ ফূর্তিতে মেতে আছো, কাল হাশরের দিনে তারাই তোমাকে দেখলে পলায়ন করবে। তোমার গোনাহর দায়ভার তোমারই।
⭕️তবুও তো অনেক দেরি হয়ে যাবে:-
জান্নাতের অনাবিল সুখ-শান্তি ও জাহান্নামের অবর্ণনীয় দুঃখ -কষ্টের কথা এ অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয়।
আমরা কি পারিনা ক্ষনিকের দুনিয়া ছেড়ে অনাবিল সুখের জায়গাতে ঠাঁই করে নিতে?
⭕️মুশরিকরাও যাকে সত্যভাষী বলে মেনে নিয়েছিল:
মহান রাব্বুলের নির্দেশে তাঁর প্রিয় রাসূল যখন সত্যের আহ্বানে শুরু করে দিয়েছিলেন, সমস্ত আরব কুরায়েশ মুশরিকরা তাঁর বিরোধী ছিল।
তবুও প্রিয় নবীজির আখলাক ও চরিত্রের মুগ্ধতা এতোই প্রগাঢ় ছিল তিনি ছিলেন চির বিশ্বাসী, “আল-আমিন”।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ধৈর্য, সহনশীলতা ও সত্যবাদিতার বর্ণনা রয়েছে এ অধ্যায়ে।
⭕️স্বাধীনতার সুখ:-
প্রকৃত স্বাধীনতা হচ্ছে অন্তরের স্বাধীনতা। মানসিকভাবে দাসত্বের জীবন পরিচালনা করে মানুষ কখনও সুখ পেতে পারে না। প্রশান্তি কেবল তখনই আসতে পারে, যখন মানুষ শত গোলামি থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র মাথা নত করবে অপরাজেয় রাব্বুল আলামীন এর কাছে।
⭕️প্রবঞ্চনা করোনা নিজের সাথে:-
প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর প্রাণপ্রিয় সাহাবিরা কিরূপ ভালোবাসতেন। তাঁদের ভালোবাসা ছিল প্রাণ উজাড় করা ,রাসূলের জন্য জানমাল, পরিবার পরিজন ছাড়তে এক মুহূর্ত ভাবতেন না। এমনই ছিল তাঁদের কাছে প্রিয় নবীজি(সাঃ)
“আমি রাসূলের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত” —- এমন মৌখিক দাবি আমাদের মত অধম বান্দার খুবই ঠুনকো। এতে হৃদয়ের দাবি কতটুকু?
⭕️চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে:-
আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি যে চাঁদকে নিয়ে এত সাহিত্য সেই চাঁদ কেমনভাবে মহান স্রস্টা সৃষ্টি করেছেন নিজ কুদরতে।
এমন নিঁখুতভাবে সুবিন্যস্ত নক্ষত্ররাজি আল্লাহর করুণায় আচ্ছাদিত।
এই সমস্ত কিছু কি রবের গুণাবলীর জন্য যথেষ্ট না? এরপরেও নিজেকে প্রবঞ্চিত করবে স্রস্টার ইবাদত থেকে?
⭕️সময়ের ভ্রান্তিতে টলোনা:-
“ইসলাম-ফোবিয়া”—অতি পরিচিত একটা শব্দ আধুনিক বিশ্বে। যেদিন থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৌহিদের প্রসার শুরু করেছেন, সেদিন থেকেই ইসলামের শত্রুরা ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়েছে যা আজও চলমান।
কুফরির জাল ছিন্ন করে তৌহিদের ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তোলাই হবে একজন মুমিনের কাজ।
⭕️তুমি ফিরবে বলে:-
কতই-না হঠকারী চিন্তাভাবনা তোমার! তুমি যৌবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়টা রেখেছ নিজের আমোদ-প্রমোদের জন্যে, আর বার্ধক্যটা আল্লাহর জন্যে!—একজন মুসলিম হিসেবে এর চেয়ে আফসোসের বিষয় আর কী হতে পারে।”
বান্দার জন্যে ক্ষমার দরজা সর্বদাই খোলা রেখেছেন তোমার রব! বান্দা শুধু একনিষ্ঠ হয়ে তাওবার জন্য হাত উঠাবে আর তখনই তার উপর অনবরত ক্ষমা ও মাগফিরাত বর্ষিত হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে।
পাঠ্য-অনুভূতি
———————-
বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে সাবলীল উপস্থাপন এবং হৃদয়স্পর্শী কথাগুলো অবচেতন মনে ধাক্কা দেয়। ভাবতে বাধ্য করে জীবনের আসল উদ্দেশ্য।
বইটা পড়ার সময় কখনো মনে হয়নি আমি কোনো লেখকের লেখা পড়ছি, বার বার মনে হয়েছে কেউ যেন আমার ভেতর থেকে উঠে এসে অন্তরের অব্যক্ত কথাগুলো আমাকেই উদ্দেশ্য করে বলছে! ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।
অন্ধকারে তলিয়ে যেতে যেতে এক টুকরো আলোর রেখা যেভাবে পথ দেখায় লেখকের বইটাও ঠিক সেরকম!
কেন পড়বেন
——————–
এই বইটা তাদের জন্য, তোমরা যারা রবকে ভুলে পথহারা পথিকের মতো হন্যে হয়ে এখনো গড্ডালিকায় প্রবাহমান।
উদ্দেশ্যেবিহীন ভুল পথ ছেড়ে এবার একটু ফিরে দেখার পালা। রবের সম্মুখে দাঁড়ানোর আগে পাথেয় গুছিয়ে রাখার এই সুযোগ হাতছাড়া করলে জীবন ব্যর্থ।
কিছু বই আছে যেগুলো শুধু অন্তরে আলো ছড়ায়, অন্ধকার হৃদয়কে আলোকিত করে। ফিরে আসার আহ্বান করে। ফিরে আসতে বলে সত্যের দিকে যে পথে আছে চিরকালীন অনন্ত সফলতার হদিশ
“তুমি ফিরবে বলে” বইটা তেমনই এক ফিরে আসার আহ্বান।
পরিশেষে
—————-
তুমি ফিরবে বলে’ বইটি রবের দিকে মানুষকে ফিরিয়ে আনার আকুতিভরা এক তীব্র মর্মস্পর্শী আখ্যান। এই বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ে অধ্যায়ে, প্রতিটি শব্দে শব্দে মিশে আছে পথহারা যুবকদের প্রতি ভালোবাসা মেশানো নববি দাওয়াত। আছে তাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করার আকুল আহ্বান।।
📚একনজরে বই পরিচিতি
বই: তুমি ফিরবে বলে
লেখক : জাকারিয়া মাসুদ
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯২
মুদ্রিত মূল্য: ২৭৫ টাকা
প্রকাশনী : সাবিল পাবলিকেশন
বিষয় : ইসলামে নারী, ইবাদত, আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা