Copyright © 2024 Seanpublication.com
প্রতিযোগিতা হোক জান্নাতের পথে (হার্ডকভার)
- লেখক : আব্দুল্লাহ ইউসুফ, ড. খালিদ আবু শাদি
- পাবলিকেশন : রুহামা পাবলিকেশন
- বিষয় : ইবাদত—আমল ও আমলের সহায়িকা, একুশে বইমেলা ২০২২, সকল প্রকাশক
Author : ড. খালিদ আবু শাদি
Translator : আব্দুল্লাহ ইউসুফ
Publisher : রুহামা পাবলিকেশন
Category : ইবাদত—আমল ও আমলের সহায়িকা
৳320 ৳224
You Save TK. 96 (30%)
প্রতিযোগিতা হোক জান্নাতের পথে (হার্ডকভার)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (1)
1 review for প্রতিযোগিতা হোক জান্নাতের পথে (হার্ডকভার)
Add a review Cancel reply
Arafat Shaheen –
এই সমাজের মানুষেরা প্রতিযোগিতা করতে পছন্দ করে। এটাই তাদের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। বর্তমান সময়ের মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতার পরিমাণ এতটা বেশি যে—মাঝেমধ্যেই তা সীমা অতিক্রম করে। দুনিয়ার সামান্য সম্পদকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আমরা সহজেই জড়িয়ে পড়ছি এমন প্রতিযোগিতায় যা প্রকৃতপক্ষে আমাদেরই ধ্বংস ডেকে আনছে। সারা দুনিয়ায় জাতিতে জাতিতে সংঘাতের মূলেও রয়েছে একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা। ফলে কত জনপদ যে বিরাণ হয়ে যাচ্ছে তার হিসাব কে রাখে!
আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশো বছর পূর্বে আরবের বুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসেছিলেন। তিনি মানুষকে সঠিক পথের দিশা দিয়ে তাদের ভ্রান্তির চোরাগলি থেকে বের করে এনেছেন। নবিজির সাহাবিরাও নানান সময়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। কিন্তু তাঁদের সে প্রতিযোগিতা কি আমাদের মতো ছিল? মোটেও তা নয়। বরং তাঁদের সকল চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু ছিল আখিরাত। তাই নবিজির ডাকে সবার আগে কে সাড়া দিতে পারেন তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে চলতো প্রতিযোগিতা। আহা! সেটা কতই না মধুর ছিল!
•
কেমন হতো—আমরা যদি নববি আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে অংশগ্রহণ করতাম আখিরাতমুখী প্রতিযোগিতায়! ধরুন, কেউ একজন প্রচুর দান-খয়রাত করেন। তাকে পেছনে ফেলার জন্য অন্য কেউ যদি আরও বেশি দান করতেন, তাহলে কেমন হতো সেটা? কিংবা মসজিদে গিয়ে সবাই যদি চাইতো সামনের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে! আমরা যদি সবাই নেমে পড়তাম ভালো কাজের প্রতিযোগিতায়; তাহলে কি সমাজে এরকম অনাচার ও অবিচার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো!
ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই কলম ধরেছেন সুলেখক ড. খালিদ আবু শাদি। তিনি আমার প্রিয় লেখকদের একজন। মুসলিমদের ইসলামি অনুশাসন মেনে চলার জন্য তিনি সব সময় তার লেখার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন। যারা ইবাদত-বন্দেগীতে পিছিয়ে থাকে, তিনি তাদের উৎসাহ দিয়ে এগিয়ে আসার কথা বলেন। ইসলামি অনুপ্রেরণামূলক লেখালেখির ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
‘প্রতিযোগিতা হোক জান্নাতের পথে’ ড. খালিদ আবু শাদির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বই। এই বইয়ে তিনি মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান জানিয়েছেন এবং তিনি কামনা করেছেন, মানুষ যেন প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে এই কাজে এগিয়ে আসে। বস্তুত দুনিয়ার জীবন তো ক্ষণস্থায়ী। আমরা আর কতদিনই বা এখানে থাকতে পারব! তাই আমাদের সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত পরকাল। আর মুসলিম হিসেবে পরবর্তী জীবনে অবশ্যই আমরা জান্নাতের আশা বুকের গহীনে পোষণ করি। তাহলে সেদিকে এগিয়ে যেতে আমাদের এত গড়িমসি কেন! ড. খালিদ আবু শাদি আমাদের ঝিমিয়ে পড়া হৃদয়কে উজ্জীবিত করার জন্যই লিখেছেন অসাধারণ এই বই।
•
বইয়ের মোট চারটি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম—প্রতিযোগিতা। যেহেতু বইটি লেখা হয়েছে প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে; তাই প্রথমেই এই বিষয়টি খোলাসা করার প্রয়োজন ছিল। লেখক যথার্থভাবেই কাজটি করেছেন।
প্রতিযোগিতা শুরু করার আগে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। তা না হলে সঠিকভাবে কাজটি করা সম্ভব হয় না। তাই লেখক ‘শুরু করার আগে’ নামে একটি শিরোনাম সাজিয়েছেন। কীভাবে একজন মানুষ নিজেকে প্রস্তুত করবে এই প্রতিযোগিতার জন্য তার বিবরণ রয়েছে এখানে। কোনো কাজে সফলতা লাভ করার জন্য সময়ের প্রতি যত্নবান হওয়া হলো প্রথম শর্ত। লেখক এখানে সে বিষয়টিও দরদের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন।
একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। দুনিয়ার প্রতিযোগিতার জন্য আমরা এক্ষেত্রে অর্থ কিংবা সম্পদ ব্যয় করে থাকি। কিন্তু জান্নাতের জন্য যে প্রতিযোগিতা—তার ফি কীভাবে নির্ধারিত হবে? এজন্য সবার আগে ‘প্রতিযোগীকে মুক্ত হৃদয়ের অধিকারী হতে হবে’। তারপর ‘অন্তর আত্মপ্রবঞ্চনা থেকে মুক্ত হতে হবে’। এই বিষয়গুলো নিয়েই সাজানো হয়েছে তৃতীয় অধ্যায়।
এতক্ষণ ধরে আমরা কথা বললাম প্রতিযোগিতার উপায়-উপকরণ নিয়ে। আমাদের এ প্রতিযোগিতা হলো জান্নাত লাভের জন্য। আর জান্নাত লাভ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন ঈমান মজবুত করা এবং অধিক হারে নেক আমল করা। ‘আমলের ময়দানে অগ্রগামী হওয়ার উপায়’ নিয়ে বইটির চতুর্থ এবং শেষ অধ্যায় রচিত। কীভাবে অধিক আমলের প্রতি আগ্রহী হওয়া যায় তা নিয়ে লেখক দারুণভাবে আলোচনা করেছেন।
•
বইটির কিছু ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য চোখে পড়েছে। আপনি যদি মানুষকে শুধু নীতিকথা শুনিয়ে সঠিক পথে আনতে চান, তাহলে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু যদি পূর্বসূরিদের গল্প এবং উদাহরণের মাধ্যমে কাজটি করেন, তাহলে সহজেই সবাই উপদেশগুলো গ্রহণ করতে পারবে। ড. খালিদ আবু শাদি ঠিক এই কাজটিই করেছেন। প্রতিটি লেখায় কারও না কারও ঘটনা স্থান পেয়েছে। তাছাড়া অসাধারণ কিছু উক্তি রয়েছে পাতায় পাতায়; যা একজন পাঠককে উদ্দীপ্ত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
আমরা সবাই আল্লাহর প্রিয় হতে চাই এবং জান্নাত লাভ করে চিরস্থায়ী সুখের ঠিকানায় নিজেদের আবাস গড়তে চাই। তাহলে সেই অনুযায়ী আমলও তো করা প্রয়োজন! ‘প্রতিযোগিতা হোক জান্নাতের পথে’ বইটি আমাদের জান্নাতের ঠিকানায় পৌঁছাতে পথের দিশা দেবে। বইটির অনুবাদ অসম্ভব ভালো হয়েছে। এত সাবলীল অনুবাদ খুব কম বইয়েরই পেয়েছি। বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল রেখে নান্দনিক একটি প্রচ্ছদ পেয়েছি আমরা। সবমিলিয়ে বইটি আমার জীবনে পড়া অন্যতম সেরা বই।