fbpx
প্রদীপ্ত কুটির (পেপারব্যাক)
প্রদীপ্ত কুটির (পেপারব্যাক)

প্রদীপ্ত কুটির (পেপারব্যাক)

134

You Save TK. 58 (30%)

প্রদীপ্ত কুটির (পেপারব্যাক)

Share This Book:

ক্যাশ অন ডেলিভারী

৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন

ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু

Description

মাহির আর লাফিজা। ভার্সিটিতে পড়াবস্থায় দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে দুজনের মধ্যে পরিচয় ছিল না। এই সমাজ ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের প্রেমের বৈধতা দিলেও একই বয়সে বিয়ের কথা উঠলে নানাজন নানান অজুহাত নিয়ে হাজির হয়। শুধুমাত্র দ্বীনের খাতিরে এই বয়সে বিয়ে করতে গেলে যে মানসিক দৃঢ়তার প্রয়োজন, তা সবার থাকে না। সৌভাগ্যের বিষয় মাহির-লাফিজা দুজনের মা-বাবার এই মানসিক শক্তি ছিল।

বইয়ের গল্প শুরু হয় সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাহির-লাফিজার বিয়ের মাধ্যমে। বিয়ের গল্পের মাধ্যমে বইটি শুরু হলেও বইটি বিয়ে, দাম্পত্য জীবনের সুন্নাত নিয়ে নয়; বইটি মূলত আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত অনুসরণ করা নিয়ে। আরও যথার্থভাবে বললে, সুন্নাত মনে করিয়ে দেওয়া নিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে কিছু সুন্নাত অনুসরণ না করার দরুন ছোটবেলার মা-বাবার শেখানো শিক্ষায় মরিচা ধরে। বিয়ের পর মাহির-লাফিজা তাদের জীবনের মরিচাগুলো পরিস্কার করা শুরু করে।
মাহির যখন অভ্যাসবশত এমন একটা কাজ করতে যায় যেটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানোর বিপরীত (হারাম), তখন লাফিজা আদুরে গলায় মাহিরকে স্মরণ করিয়ে দেয়। একইভাবে লাফিজাও যখন ভুলবশত কোনো কাজ করে ফেলে, যেটা করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন, তখন মাহির স্ত্রীকে সংশোধন করিয়ে দেয়। সুন্নাতে উদ্ভাসিত মাহির-লাফিজার ঘরের নাম আমরা দিয়েছি ‘প্রদীপ্ত কুটির’।

সম্পাদনা : মুহাম্মাদ জুবায়ের
শারই সম্পাদনা : আবদুল্লাহ আল মাসউদ
মোট পৃষ্ঠা : ১২৮

Author

Author

আবদুল্লাহ আল মাসউদ

আরিফুল ইসলাম

মুহাম্মাদ জুবায়ের

Reviews (4)

4 reviews for প্রদীপ্ত কুটির (পেপারব্যাক)

  1. সাওদা সিদ্দিকা নূর

    ◾প্রারম্ভের পূর্বে:

    সে প্রায় বছরখানেক আগের কথা। নিজের জন্মদিন কাছাকাছি ছিল। বরাবরের মতোই এটা ভেবে খুব খোশমেজাজে ছিলাম যে, সকল বান্ধবীরা উইশ করবে, ট্রিট চাইবে, ট্রিট দিবে। এমনই এক ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে আমি ফেইসবুক স্ক্রল করছিলাম। ঠিক তখনই আমার কলেজের এক দ্বীনি বোনের একটা পোস্ট চোখে পড়ল। পোস্টে কোনো এক বইয়ের কয়েকটা পৃষ্ঠার ছবি দেয়া ছিল। প্রথম পৃষ্ঠার ঠিক উপরে লেখা ছিল ‘জন্মদিনের মর্মবীণ’।

    এটা বলে রাখা সমীচীন যে, তখন আমার দ্বীনে ফেরার বয়স বেশি দিন হয়নি। দ্বীনি ইলম তখন শূন্যের কোঠায়। ইসলাম তখন আমার কাছে পর্দা ও নামাজের ভেতর সীমাবদ্ধ। কিন্তু দ্বীনি ইলম গ্রহণের তীব্র ইচ্ছা ছিল। তাই এমন একটা পোস্ট দেখে গড়গড়িয়ে পড়ে ফেললাম। পোস্টটি পড়ে যে অনুভূতি ছিল, তা শুধুই আফসোস। কারণ জীবনের এতগুলো বসন্ত চলে গেল, অথচ আমি তখনও জানতে পারলাম না যে, আমাদের পালিত জন্মদিন শয়তানের প্রধান উৎসব।

    ‘জন্মদিনের মর্মবীণ’ গল্পটা পড়ার পরথেকেই খোঁজা শুরু করলাম, এটা কোন বইয়ের গল্প। এরপর জানতে পারলাম বইটি উদীয়মান তরুণ লেখক আরিফুল ইসলামের বই।এরপর বইটি পড়ার তীব্র ইচ্ছা জাগে। এরপর একদিন সুযোগ করে কিনেও ফেলি বইটা। বইটা পড়ার পর মনে হলো বইটা সম্পর্কে কিছু লেখা উচিত। তাতে মানুষ একটি সুন্দরের গল্প জানবে আবার লেখকের যদি কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকে, তবে তিনি সেটা ঠিক করে নিতে পারবেন।
    .
    .
    .
    ◾প্রারম্ভ:

    অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে বাংলা প্রথম পত্র বইয়ে একটা কবিতা পড়েছিলাম। কবিতাটার নাম ছিল ‘পাছে লোকে কিছু বলে’। কবিতাটার প্রথম লাইনগুলো ছিল ঠিক এমন,

    ‘করিতে পারি না কাজ,
    সদা ভয় সদা লাজ
    সংশয়ে সংকল্প সদা টলে
    পাছে লোকে কিছু বলে।’

    আমাদের সমাজটা এতটাই রসাতলে গিয়েছে যে, এখন একটা ভালো কাজ করতে গেলেও দশবার ভাবতে হয় মানুষ কী বলবে? মানুষ কী ভাববে? অথচ এই সমাজে বিয়ের পূর্বে প্রেম, নারী-পুরুষের অবাধ সংস্পর্শ ডাল ভাতের মত সহজ। সমাজের এইসব কাজের পাশাপাশি পশ্চিমা অপসংস্কৃতির আগ্রাসন তো আছেই। পশ্চিমা অপসংস্কৃতির দাবানলে বর্তমান যুব সমাজ খাক হয়ে যাচ্ছে, অথচ তাদের বোধোদয় হচ্ছে না। ভুলে যাচ্ছে নিজের একটা ধর্ম আছে, সর্বোৎকৃষ্ট সুশৃঙ্খল জীবনব্যবস্থা আছে। হেমিলনের বাঁশিওয়ালা গল্পের ইদুরের ন্যায় প্রবৃত্তির লাল-নীল বাতির পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছে তারা।

    তবে এদের ভেতর থেকে কেউ কেউ নিজেদের সুন্নতে নববির শীতল পরশে জীবন প্রাশান্তিময় করে তোলে৷ নিজেদের ঘরে প্রজ্বলিত করে নবুয়্যতের প্রদীপ্ত আলো। তারা সমাজের এইসব লোকচক্ষু ও পশ্চিমা অপসংস্কৃতির আগ্রাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সত্যের ঘুড়ি ওড়ায়। অপসংস্কৃতির প্রতিকূলে চলে নিজেদের জীবনে ধারণ করে রাসুলের (সা.) সুন্নাহ। ভার্সিটি পড়ুয়া এমনই এক দম্পত্তি মাহির ও লাফিজা। সমস্ত সমাজ যখন হারাম সম্পর্কে ডুবে যাচ্ছে, ঠিক তখন তারা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শুরু করে সুন্নাহে ভরপুর সংসার। ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের ভীত তৈরী করে সুন্নাহের অনুকরণে। তারা তাদের সংসার জীবনে একে অপরের ভুল ত্রুটিগুলো সুন্নাহ অনুসরণ করে সংশোধন করে দেয়, নিজেকে সংশোধন করে নেয়। এভাবে সুন্নাহর নূরানী আলোয় প্রদীপ্ত হয়ে ওঠে তাদের ঘর। কুরআন ও সুন্নাহর আলোয় আলোকিত এই ঘরের নাম হয় ‘প্রদীপ্ত কুটির’।
    .
    .
    .
    ◾লেখক পরিচিতি:

    আরিফুল ইসলাম লেখক হিসেবে যতটা না পরিচিত, তার থেকে বেশি পরিচিত ফেইসবুকের বহুল জনপ্রিয় গ্রুপ মিম্বারের প্রতিষ্ঠাতা হিসবে। পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘আর্গুমেন্টস অব আরজু’ নিয়ে লেখালেখির জগতে আগমন করলেও বর্তমানে তার অনেকগুলো জনপ্রিয় বই বের হয়েছে। যেমন ‘চার তারা’, ‘তারা ঝলমল’, ‘ ওপারেতে সর্বসুখ’। তাছাড়া শুনেছি লেখকের আরো কিছু বইয়ের লেখা চলমান রয়েছে।
    .
    .
    .
    ◾বই আলাপন:

    সমর্পণ প্রকাশন পরিবেশিত ‘প্রদীপ্ত কুটির’ বইটিতে ভূমিকা ও লেখকের কথা সহ ৩০টি পাঠ আছে। পাঠ বললে ভুল হবে, এখানে মাহির ও লাফিজার দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাগুলো গল্প আকারে প্রতিটি পাঠে দেয়া হয়েছে।

    প্রকাশক বইয়ের প্রথমেই বলেছেন, এই বইয়ের উদ্দেশ্য সুন্নাহগুলো জানা। আর প্রতিটি গল্পেই সুন্নাহগুলো খুবই সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন লেখক।

    এক সময় মক্কার মুশরিকরা বলত, ‘এ কেমন ধর্ম রে বাবা! টয়লেটে যাওয়াও শেখায়!’ তখন সালমান ফারসি (রা.) বলেছিলেন, ‘এটাই তো আমাদের গর্ব যে, আমরা এমন এক রাসুলের অনুসরণ করি, যিনি এত ছোটোখাটো বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেন।’

    মেসওয়াক থেকে ড্রোন, বেডরুম থেকে গণভবন, কোথায় নেই এই ধর্ম? কোথায় নেই রাসুলের (সা.) সুন্নাহ? কিন্তু আফসোস! যারা নারীদের সমান অধিকার দেওয়ার নামে নারীদের পণ্য রূপে উপস্থাপন করে, ফ্রি মিক্সিংয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর সবথেকে বেশি পরিচয়হীন সন্তান ও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে যাদের নামে, তাদের বলা হয় মানব সভ্যতার সূচক। আফসোস! তারা আবার মুসলিমদের সভ্যতা শেখাতে আসে। এটা যতটা না হাস্যকর, তারথেকে বেশি কষ্টের। কারণ এই নিকৃষ্ট সভ্যতার অধিকারী ইউরোপীয়দের আইডল মানে আমাদের তরুণ সমাজ।

    আগেই বলেছি ‘প্রদীপ্ত কুটির’ বইয়ের মাহির ও লাফিজা স্রোতের প্রতিকূলে চলে। সেই ১৪০০ বছর পূর্বে উদিত সত্যিকার মানব সভ্যতাকে তারা আষ্টেপৃষ্টে ধরেছে। নবুয়্যতের যে দ্বীপ থেকে সাহাবারা (রা.) নিজেদের আলোকিত করেছিলেন, আলোকিত করেছিলেন বিশ্ব, সেই সত্যের দ্বীপকে নিজেদের ঘরে পুনরায় প্রজ্বলিত করে মাহির ও লাফিজা।

    মাহির ও লাফিজার বিয়ে পূর্বের ঘটনা থাকে ‘বন্ধনের সুচনায়’। এখানে কীভাবে মাহির ও লাফিজার বিয়ে হয়, সেই ঘটনা রয়েছে। এই বন্ধনের সুচনায় সবথেকে বিস্মিত হয়েছি তখন, যখন রাসুলের (সা.) সুন্নাহ অনুসরণ করার জন্য মাহির তার থেকে বয়সে বড় লাফিজাকে বিয়ে করে। আর লাফিজাও কৌশল করে তার বাবাকে বিয়ের জন্য রাজি করায়। কী সেই কৌশল? কীভাবেই বা মাহির ও লাফিজার বিয়ে হয়, সেটা অবশ্য বলব না। বইতে পড়ে নিবেন।

    তারপর আসে ‘সন্দেহ দূরীকরণ’। এখানে নব বিবাহিতদের নিয়ে ভার্সিটিতে যেন কোনো সন্দেহের সৃষ্টি না হয়, তার জন্য মাহির সুন্নাহ অনুযায়ী সুন্দর একটা পদ্ধতি অবলম্বন করে।

    তারপর আসে ‘সাধারণরা ঘুমায়, অসাধারণরা জেগে থাকে’৷ রাত্রি জাগরণ, অতপর লাফিজার রহস্যময় কিছু অঙ্কের অনুপাত। তারপর সেই অনুপাত ভাঙিয়ে মাহিরের কিছু নসীহাহ গ্রহণ৷ বাস্তবিক অর্থে এই অনুপাতগুলো দেখে লাফিজাকে খুবই বুদ্ধিমতী মনে করেছিলাম। তারপরের গল্পগুলোতে আমার সেই ধারণা সত্যে রূপ নেয়। যেকোনো ছেলে লাফিজার মত মেয়েকে জীবন সঙ্গী হিসেবে চাইবে।

    এরপর আসে ‘ও-আযান, ও কি পাপিয়ার ডাক, ও কি চকোরীর গান’, ‘সুগন্ধীকথন’, ‘আমি দেখেছি তোমার রূপ, বেসেছি তোমায় ভালো; অন্য কারোর কাছে যে চাই না দু’চোখ ভরা এ আলো’, ‘জন্মদিনের মর্মবীণ’………………….। এভাবেই একের পর এক এগিয়ে চলে মাহির ও লাফিজার মিষ্টি সংসার। অভিমান-অভিযোগ, বিতর্ক-বিবাদ ছাড়া সুন্নাহ অনুকরণে তাদের সংসার আগায় ঢেউহীন স্রোতস্বীনির অবিরত বয়ে চলার মত।

    তাছাড়া বইয়ের কভার, বাইন্ডিং, পৃষ্ঠার কোয়ালিটি, ফণ্টের সঠিক ব্যবহার বইটিকে আকর্ষণীয় করেছে। সম্পাদকদের সঠিক দৃষ্টি বইটির বানানগত দিক দিয়ে করেছে নির্ভুল।

    বইটি অনেক ছোটো। তাই পড়তে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না। যারা পড়ুয়া নন, সময় সল্পতায় থাকেন, তারা যদি ধীরে ধীরেও পড়েন, তবে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা লাগবে এক সাথে। আমি এক বসায় বইটি পড়েছি। সম্ভবত দেড় ঘণ্টা লেগেছে পড়তে।
    .
    .
    .
    ◾পাঠ অনুভূতি:

    ব্যক্তি হিসেবে আমি খুবই আবেগি। কারো সুখ ও ভালো দেখলে আনন্দে যেমন কান্না চলে আসে, তেমন ছোটো ছোটো বিষয়ে কেউ আমাকে একটু আঘাত করলে প্রচন্ড কষ্ট পাই। কারো সুখ দেখে কান্না করাটা ভালো হলেও, ছোটো ছোটো কষ্টে কান্না করাটা খুবই দুর্বল মানুষের লক্ষণ। এই কথাগুলো শুনে রিভিউ পাঠক মনে করতে পারেন, আমি বুঝি নিজের মার্কেটিং করছি। আসলে ব্যাপারটা একটুও তেমন নয়। এটা বলার কারণ হচ্ছে, বইটা পড়ে আমার কী অনুভূতি হয়েছিল, সেটা বোঝানো।

    বইয়ে মাহির ও লাফিজার এই সুন্নাহ মাখা সুন্দর জীবন যে কারো কাম্য। আমি মেয়ে হিসেবে যেমন এমন সংসার চাইব, আমার বিশ্বাস যে আমার এই রিভিউটা পড়ছে সেও এমন সংসার চাইবে। হয়ত সে বইটি পড়েনি। তবে যেকোনো দ্বীনদার ছেলে বা মেয়ে যদি এই বই পড়ে, তবে তার কল্পিত সংসার তার চোখের সামনে ভাসবে। মনে হবে, লেখক যেন আমার সকল স্বপ্নগুলোকে বইয়ে আক্ষরিক রূপ দিয়েছে। আর এজন্যই মাহির ও লাফিজার সুন্দর সুখের সংসারের গল্পগুলো পড়ে মাঝে মাঝেই আনন্দাশ্রুতে ভিজেছে বইয়ের পাতা। সেই অনুভূতি কখনো ব্যক্ত করা সম্ভব নয়।
    .
    .
    .
    ◾বিশেষ মন্তব্য:

    বইয়ের শুরুতে প্রকাশক বলেছেন, এটা কেবল Literature for the sake of literature নয়। এই বইয়ের উদ্দেশ্য দৈনন্দিন জীবনে সুন্নাহর প্রচার। তাই কেউ যেন সাহিত্য সমালোচনার ছুরিকাঁচি দিয়ে এজাতীয় বইকে ব্যবচ্ছেদ না করি। উদ্দেশ্যের দিকে নজর দেই৷

    এই কথার উপর ভিত্তি করে আমি সাহিত্য সমালোচনা করব না। তবে আমার মনে হয় লেখক যদি আরেকটু চেষ্টা করতেন, তবে প্রকাশকের এই কথাটা বলার প্রয়োজন হতো না। অর্থাৎ, বইটি সুন্নাহ শেখার জন্য একশত ভাগ উপযোগী। যদি লেখক সাহিত্যের দিকে সামান্য দৃষ্টিপাত করতেন, তবে সাহিত্য রসের দিকথেকে বইটি পরিপূর্ণ হয়ে উঠতো। পাঠকের হৃদয়ে আরো গভীর ভাবে ছাপ ফেলত পারত। আর আমি মনে করি, লেখকের সেই ক্ষমতা আছে। কারণ বইয়ে রবীন্দ্রনাথের যেসব উক্তি ও কবিতা/গানের লাইন ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা যদি কেউ সাহিত্য সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা না রাখে, তবে কখনোই সেইসব উক্তি ও লাইনগুলো ব্যবহার করতে পারবে না।

    তারপর বইটিতে অনেক ইংরেজি শব্দের ব্যবহার রয়েছে। যেহেতু বইটি সহজ-সরল ভাবে লেখা হয়েছে, সেহেতু এই ইংরেজি শব্দগুলো ব্যবহারও এড়িয়ে চললে ভালো হতো। কারণ সাধারণ মানুষের এগুলো বুঝতে একটু কষ্ট হবে। এটা তো সুন্নাহ শেখার বই। তাই যেকোনো শ্রেণীর পাঠক যাতে পড়তে পারে, সেজন্য কিছু কঠিন ইংরেজি শব্দ ব্যবহার না করা উত্তম।

    বিশেষ মন্তব্যের আর কিছুই নেই। তবে শুনেছি, বইটির সিক্যুয়াল আসবে। এটা খুবই আনন্দের সংবাদ আমার জন্য। আশা করব বইটির পরবর্তী পার্ট লেখার সময় লেখক এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন।
    .
    .
    .
    ◾পাঠ অভিমত:

    আসলে বাস্তব জীবনে আমি এমন কোনো সংসার দেখিনি, যেখানে কোনো ঝগড়া হয় না, বিবাদ হয় না। আর এমন কোনো সংসারও দেখিনি, যেখানে সুন্নাহর সর্বোচ্চ ব্যবহার রয়েছে।

    সুন্নাহ ও সংসার শব্দ দু’টোর আক্ষরিক কোনো মিল না থাকলেও সুন্নাহ ছাড়া সংসার ঝগড়া-বিবাদময়। যাদের সংসারে বিবাদ লেগেই থাকে, তাদের দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে তাদের সংসারে সুন্নাহর ব্যবহার নেই। যদিও প্রকাশক বলেছেন, এই বইটি সংসারের সমস্যা সমাধানের জন্য নয়। তারপরও আমি মনে করি, সংসার কিংবা সমাজ, যেকোনো স্থানে রাসুলের (সা.) সুন্নাহ মোতাবেক চললে, যেকোন সমস্যা সৃষ্টি হবার পূর্বেই তার সমাধান পাওয়া যায়। তাই অবশ্যই সুন্নাহ জানার জন্য বইটি পড়তে হবে।

    তাছাড়া আখিরাতে মুক্তির জন্য অবশ্যই রাসুলের (সা.) সুন্নাহ জানতে হবে ও মানতে হবে। এজন্যও আমাদের সুন্নাহর সর্বোচ্চ ব্যবহার কোথায়, কীভাবে করতে হবে সেটা বুঝতে হবে। আর এর জন্য ‘প্রদীপ্ত কুটির’ বইটির গুরুত্ব অনেক।

    বইটির প্রধান চরিত্র দু’টো থাকে ভার্সিটি পড়ুয়া। তাদের কোনো চাকরি নেই। নেই টাকা পয়সার বাহার। তারপরও তারা দিব্যি সংসার করছে। বর্তমান সমাজে যারা বিয়েকে ক্যারিয়ার গড়ার প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখে, তাদের জন্য বইটি একটা চপেটাঘাত। তাছাড়া আজকাল দেখা যায় ভার্সিটি পড়ুয়া যুবকদের ছাত্রজীবন কাটে টিভির পর্দায় ক্রিকেট বা আন্তর্জাতিক কোনো ফুটবল ম্যাচ দেখে। আবার অনেকে থাকে গেইমে বুদ হয়ে। আর যার কারণে তাদের ভেতর বিয়ের জন্য ম্যাচিউরিটি আসে না। যে ছেলে দুনিয়ার বাস্তবতা ভুলে খেলা আর গেইমে বুদ হয়ে থাকে, তাকে কে বিয়ে করবে? আর তাকে কেনই বা বিয়ে দিবে? এজন্য বাবা-মা ভাবে বিয়ে করলে বউকে খাওয়াবে কী? এটা একেবারেই সঠিক। কারণ এইসব যুবকরা আদৌ সংসার করার যোগ্য না। তাই তাদের অবশ্যই ছাত্র জীবন থেকেই এইসব বদ অভ্যাস ত্যাগ করে মাহিরের মত নিজেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করতে হবে, যাতে বাবা-মা বিয়ে দিতে দ্বিমত না করে। বাবা-মা যখন দেখবে, তাদের ছেলে সংসার, দুনিয়া সম্পর্কে খুবই সিরিয়াস, তখন তারা নিজেরাই বুঝবে সন্তানকে বিয়ে দেয়া যায়। তাই যুবকদের জন্য বইটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    “যেই ছেলেরা দ্বীনকে প্রাধান্য দিয়ে বিয়ে করে, তারা হয়ত রাজকন্যার মতো সুন্দরী মেয়ে পায় না, কিন্তু সাদামাটা চেহারার মেয়েটির মধ্যে আল্লাহ এমন এক ম্যাজিক মিশিয়ে দেন যে, রাজকন্যাদের ডালভাত মনে হয়।” বইয়ের এই উক্তিটা এতটাই প্রিয় যে আমি আমার নোটসে উক্তিটা টুকে রেখেছি।

    এককথায় বইটি আমার কাছে খুবই প্রিয়।
    .
    .
    .
    ◾যবনিকা:

    ‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।’

    বইটা সম্পর্কে আরো অনেক কিছু বলা যেত। কিন্তু এত বড়ো রিভিউ পড়তে পাঠক বিরক্ত হতে পারে। তাই এখানেই ইতি টানলাম। আশা করব প্রতিটা মানুষ সুন্নাহর চাঁদর জড়িয়ে নিক। প্রতিটি সংসার মাহির ও লাফিজার মতো হয়ে উঠুক।
    .
    .
    .
    ___________________________________
    ◾এক নজরে বই পরিচিতি:

    বইয়ের নাম: প্রদীপ্ত কুটির
    লেখক: আরিফুল ইসলাম
    প্রকাশনায়: সমর্পণ প্রকাশন
    পৃষ্ঠা সংখ্যা:১২৮
    মুদ্রিত মূল্য: ১৯২ টাকা মাত্র
    ____________________________________

  2. Najmul Hasan Sajib

    #অনুভূতির_প্রকাশক

    বইটা মূলত গল্পাকারে লেখা। সাতাশটি গল্পের মেসেজগুলো পড়ে আশা করি অনেকেই উপকৃত হবেন। বিশেষ করে যারা নবদম্পতি তাদের বেশি ভালো লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিয়ে করা দুজন মানুষের জীবনের গল্প। প্রতিটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘লাফিজা’ ও ‘মাহির’। তাদের মাধ্যমেই লেখক কুরআন-হাদিসের প্রয়োজনীয় মেসেজ জানিয়েছেন। কয়েকটি টপিক আমার অজানা ছিল বইটার মাধ্যমে জানতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ।

    আগ্রহীরা পড়তে পারেন আশা করি ভালোই লাগবে।

    বই ~ প্রদীপ্ত কুটির
    লেখক ~ আরিফুল ইসলাম
    প্রকাশনী ~ সমর্পণ প্রকাশন( এখন প্রকাশনী পরিবর্তন হয়েছে)
    মূল্য ~ ১৯২
    পৃষ্ঠা ~ ১২৫

  3. Meher Afroz

    বইঃ প্রদীপ্ত কুটির
    লেখকঃ আরিফুল ইসলাম
    প্রকাশনাঃ সমপর্ণ প্রকাশন

    একটি প্রশান্তিকর সুন্দর জীবন যাপন করতে হলে বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না বিলাসবহুল বাড়ী-গাড়ীর । প্রয়োজন হয় না বিল গেইটসের মত কাড়িকাড়ি টাকার মালিক হওয়া। একটি রুম আর একটি টিউশনী করিয়েও যে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করা যায় তার উদাহরণ হিসেবে ‘প্রদীপ্ত কুটির’ বইটির মাহির আর লাফিজাকে চরিত্রে দেখতে পাওয়া যায়।
    একজন দ্বীনদার স্বামী-স্ত্রী যে , একে অপরের দ্বীনি শিক্ষা এবং দুনিয়াবি জ্ঞান বৃদ্ধিতে কতবড় সহায়ক তার উদাহরণও এ বইটির মাহির আর লাফিজা। একজন একটি আমল জানে তো অপরজনকে বেস্ট ফ্রেন্ডের মত শিখিয়ে দিলো।বাহ! এটাই তো দ্বীনের সুন্দর্য। বিবাহিত জীবনের সার্থকতা তো এখানেই নিহিত।
    যারা তাদের আর্নিং সোর্স বৃদ্ধি করার জন্য বিয়ে করতে দেরি করে যৌবনের মূল্যবান সময়গুলোকে এই ফেতনার রাজ্যে অতিবাহিত করছেন তাদের উচিৎ বইটি অন্ত্যত একটি বার পড়া। আর যে সকল বোনেরা বিল গেইটস হুজুর স্বামী পাওয়ার জন্য কুড়ি ছাড়িয়ে বুড়ি হতে চলেছেন তাদেরও উচিৎ বইটি পড়া। তাছাড়া গার্ডিয়ানরা যারা মনে করছেন ছেলেমেয়ের দ্রুত বিয়ে দিয়ে দিলে পড়ালেখার সাড়ে সর্বনাশ হয়ে যাবে তারাও বইটি পড়বেন। কেমন করে মাহির আর লাফিজা ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া হওয়া সর্ত্তেও দ্বীনি সাংসারিক জীবনে একজন আরেক জনের চক্ষু শীতলকারী হয়ে ইসলামিক পরিবার গড়ে তুলেছেন তা বুঝতে পারবেন।
    ( ইন শা ল্লাহ)
    একটা কথা না বললেই নয়, শেখানোর ছলে গল্পাকারে এমন দাম্পত্য জীবনের উদাহারণ টেনে আনাতে বইটি আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। লেখককে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুক।
    জ্বাযাকুমুল্লাহু খইরুন।

    রিভিউদাতাঃ Meher Afroz

  4. Shahriar Ahammed

    📚 বই নিয়ে আলোচনা 📚

    বই – প্রদীপ্ত কুটির
    লেখক – আরিফুল ইসলাম

    প্রদীপ্ত কুটির–ভীষণ দীপ্তিময় এক কুটির। ঘরটা ছোট কিন্তু তা অট্টালিকার চেয়েওও বেশি আলোকিত। ঘরটা ছোট কিন্তু তা প্রাসাদের চেয়েও বেশি শান্তিময়।

    বইয়ের মূল চরিত্রদ্বয় হলো লাফিজা ও মাহির। ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয় লাফিজা ও মাহিরের বিয়ের মাধ্যমে। যেখানে লাফিজা, মাহিরের চেয়ে ১ বছরের বড় হওয়ায়, ছোটোখাটো একটা জটিলতা সৃষ্টি হলেও আল্লাহর রহমতে শান্তিপূর্ণভাবে সুন্নাহ অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

    এরপর পুরো বই জুড়ে বিভিন্নভাবে সুন্নাহকে তুলে ধরা হয়েছে। কখনো পরিবারের জন্য খরচ করার কথা, কখনো সুন্নতী লেবাসের কথা, কখনো বলা হয়েছে স্বামী স্ত্রীর একপাত্রে পান করার কথা। বিবাহ-পরবর্তী সময়ের আমলযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন লেখক। আল্লাহ তায়ালা লেখককে উত্তম প্রতিদান দিন।

    সাহিত্যের বিচারে এর ওপর হয়তো কঠোর হস্তে ছুড়ি-করাত চালানোর সুযোগ আছে। কিন্তু লেখক যে বার্তা আমাদের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন তাকে অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই। মাঝে মাঝে লেখা, লেখার উদ্দেশ্যকে ছাড়িয়ে যায়। লেখকের হৃদয়–ইশক এর উষ্ণ ধারায় সিক্ত হয়ে থাকে তার লেখা। এই লেখার উপর করাত চালাব, আমি কি এতোই নিষ্ঠুর?

    তবে, শেষ করার ক্ষেত্রে লেখক হয়তো তাড়াহুড়ো করে ফেলেছেন। শেষটা আরও সুন্দর করা যেত। পুরো বই যেখানে লাফিজা এবং মাহিরের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে, সেখানে শেষ গল্পে শুধু মাহিরের উপস্থিতি আমার জন্য হতাশার। আশা করি পরবর্তীত সংস্করণে লেখক বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

    বইটি কারা পড়বেন! খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সবাই পড়তে পারেন, আবার সবাই না। যারা বিয়ে করার কাছাকাছি আছেন বা বিয়ে করেছেন শুধু তাদেরই আমি পড়ার পরামর্শ দেব।

    আমি মনে করি লেখকের লেখার ছাপ যখন পাঠকের মনে বা জীবনে পড়ে তখনই তার লেখা চূড়ান্ত সার্থকতা পায়। শুভকামনা রইল লেখকসহ বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য। জাযাকুমুল্লাহ খাইর। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart

Sign in

No account yet?

ধন্যবাদ, আপনার প্রি-অর্ডারটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আপনার যে কোন প্রশ্ন অথবা অর্ডারে কোন পরিবর্তনের জন্য ০১৮৪৪২১৮৯৪৪ নাম্বারে কল করুন ।