fbpx
মুক্ত বাতাসের খোঁজে (পেপারব্যাক)
মুক্ত বাতাসের খোঁজে (পেপারব্যাক)

মুক্ত বাতাসের খোঁজে (পেপারব্যাক)

Author : লস্ট মডেস্টি 
Editor : আসিফ আদনান
Publisher : ইলমহাউস পাবলিকেশন
Category : পর্নোগ্রাফির ক্ষতি এবং নিরাময়


পর্নোগ্রাফির ক্ষতি বিষয়ক আলোচনা ও তা থেকে রক্ষার উপায়।

বইটি বিশেষ করে তরুণদের জন্য, যারা চায় তার ভবিষ্যত সুন্দর হোক, সুখে ভরে উঠুক তার ঘর। উঠতি বয়সী তরুণেরা যারা মাত্রই অন্ধকার দুনিয়া চিনতে শুরু করেছে, এই বইটি হতে পারে তাদের রক্ষার উসিলা। 

230

মুক্ত বাতাসের খোঁজে (পেপারব্যাক)

Share This Book:

ক্যাশ অন ডেলিভারী

৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন

ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু

Author

Author

আসিফ আদনান

Reviews (5)

5 reviews for মুক্ত বাতাসের খোঁজে (পেপারব্যাক)

  1. Meher Afroz

    খুব ভালো মানের একটা বই। আলহামদুলিল্লাহ।

  2. Muhammad Tamimul Ihsan

    ||বুক রিভিউ||

    এক নীল অন্ধকার। ভিতরে বিক্ষিপ্তভাবে চলাচল করছে কিছু মানবসন্তান। কথায় আছে,কিছু অন্ধকার প্রচন্ডভাবে মানুষকে আতঙ্কিত করে আবার কিছু অন্ধকার মানুষকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করে।মানুষকে আবদ্ধ করে ফেলে অবোধ্য,অনতিক্রম লালসা আর তীব্র কৌতুহলের জালে।কি বুড়ো, কি তরুণ সবাইকে আকর্ষণ করে এই অন্ধকার কৌতুহলের জাল।গুটিগুটি পায়ে তন্ময়, মন্ত্রমুগ্ধ দ্রষ্টা যখন এই অন্ধকারের কিনারায় এসে দাড়ায়,অতল গহ্বর তাকে গ্রাস করে নিয়ে যায় অন্ধকার জগতে।ইংরেজিতে একটা প্রবাদ পড়েছিলাম যে, “If you gaze long into an abyss,the abyss also gazes into you”অর্থাৎ আপনি যদি অতল গহিনে তাকাতে থাকেন তবে অতল গহ্বরও আপনাকে দেখতে পাবে।

    ■ “মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বইটি এমনই এক অন্ধকার নিয়ে।নীল অন্ধকার,পর্ণোগ্রাফি।
    ঘুনেধরা সমাজের বিষাক্ত বাতাসে তরুণদের ফুসফুস যখন ক্ষত-বিক্ষত,তখন “মুক্ত বাতাসের খোঁজে”বইটি নিয়ে এলো মুক্তির সুবাতাস।

    ■ বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে পর্ণোগ্রাফি নিয়ে।আলোচনা করা হয়েছে পর্ণোগ্রাফির ক্ষতিকর দিক এবং ভবিষ্যৎে প্রভাব ফেলবে এমন দিক গুলো নিয়ে।

    ■ যদিও পর্ণোগ্রাফি আমাদের ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে কিন্তু এখনো পর্ণোগ্রাফি নিয়ে কথা বলা এই সমাজে ট্যাবু।পর্ণোগ্রাফি নিয়ে কথা বলা “অশোভন” “নির্লজ্জ” “অশ্লীল” “বেহায়া”। হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়া পর্ণোগ্রাফি “আকাশ সভ্যতার অংশ “হলেও, পর্ণোগ্রাফির ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে কথা বলা”সভ্য আলাপচারিতার অনুপযোগী। অপ্রিয় সত্যকে স্বীকার করে নেয়ার বদলে আধুনিক মানুষ আগ্রহী সত্যকে নিজের মতো ব্যাখ্যা করতে।এইসব যুক্তিহীন ট্যাবু এখন আমাদেরই ভাঙ্গতে হবে। ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে।নাহলে হয়তো আমাদের প্রজন্ম অথবা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই নীল অন্ধকারের মাঝেই হাবুডুবু খাবে।যার ফল সর্বশেষ গিয়ে দাঁড়াবে…………………….।

    ■ “মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বইটিতে শুধু পর্ণোগ্রাফির বিরুদ্ধে ধর্মীয় দিকগুলোই আনা হয়নি বরং তার চেয়েও বেশি আনা হয়েছে সাইন্টিফিক দিকগুলো। কীভাবে পর্ণোগ্রাফি,মাস্টারবেট আমাদের শরীরের ক্ষতি করছে আর এর প্রভাব পড়ছে সমাজের উপর।বিষিয়ে তুলছে পরিবারের সম্পর্ক গুলোও। এগুলো নিয়েই মূলত বইটি লেখা।

    ▪︎ এছাড়াও বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে একসময়কার নারী-পুরুষের পবিত্র ভালোবাসা নিয়েও।যেখানে একসময় পুরুষেরা নারীর চোখের তাঁরায় ভালোবাসা খুঁজতো,নারীর জন্য ছুটন্ত ষাঁড়ের চোখে লাল কাপড় বাধতেও দ্বিধা বোধ করতো না,সারা পৃথিবী খুঁজে ১০৮টি নীল পদ্ম খুঁজে আনার প্রতিজ্ঞা করতো, সেখানে আজ তারা ভালোবাসা খুঁজে বেড়ায় নারীর শরীরের ভাজে।নারী-পুরুষের পবিত্র ভালোবাসা আজ সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে পশুর মতো যার তার সাথে যত্রতত্র শারীরিক সম্পর্কে। কিন্তু কেন…….????উত্তর আছে।একটু ভাবুন তো। কেন হচ্ছে এসব….???এর পিছনে সবচেয়ে বড় যে কারণ তা হচ্ছে পর্ণোগ্রাফি।

    ■ তাই বলতে পারেন আমাদের অবহেলায়, আমাদের উদাসীনতায় এদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে পর্নোগ্রাফি। নষ্ট করে দিয়েছে, দিচ্ছে লাখো তরুণের প্রাণ।নাকি হাজারো খুন ধর্ষণের সংবাদ আপনার চোখে পড়েনা ? সহস্র পরিবার ভাঙনের শব্দ আপনি শুনতে পাননা ? আপানর চোখে পড়ছেনা যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি হয়ে যাওয়া মা, শিশুদের করুণ চেহারাগুলো ? সমাকামিতা ধীরে ধীরে সয়লাব হচ্ছে এ ভূমিতে সেটাও কি চোখে পড়েনা আপনার ? নাকি অজাচারের খবর পড়ার জন্য এখনো বসে আছেন ঝিম মেরে ?
    হয়তো এখন তর্ক করে বলবেন সব গুলো অন্যায়ের পিছনে তো পর্ণোগ্রাফি দায়ী না। কিন্তু জানেন এক সমীক্ষা অনুযায়ী এইসব অপরাধের পিছনে ৯৫% দায়ী এই পর্ণোগ্রাফি৷ আর কতো জেগে জেগে ঘুমুবেন ? উঠুন। আড়মোড়া ভাঙ্গুন। জানুন পর্নোগ্রাফির ক্ষতিকর প্রভাব এবং এই মরনাসক্তি থেকে উত্তরণের উপায়। বাঁচান নিজেকে, নিজের প্রজন্ম, পরবর্তী প্রজন্মকে। সর্বোপরি সমাজকে নীল অন্ধকারের মরণকামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চাইলে পড়ুন পর্নোগ্রাফির ক্ষতিকর দিক নিয়ে বাংলা ভাষার প্রথম বই, “মুক্ত বাতাসের খোঁজে”।

    ■ অনেক কিছু জানতে পারবেন এই বইটি পড়ে।যদি সামর্থ্য থাকতো বইটি পড়তে বর্তমান তরুণ যুবক-যুবতীদের বাধ্য করতাম। যারা এই বইয়ের পিছনে কাজ করেছেন তাদেরকে আল্লাহ উত্তম জাজা’হ দান করুন। তরুণ সমাজের জন্য তাদের এই কাজের প্রতিদান আল্লাহ ছাড়া আর হয়তে আর কেউ তাদেরকে উত্তম ভাবে দিতে পারবে না।

    মাআসসালাম!

    এক নজরে “মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বই :

    বইয়ের নাম : মুক্ত বাতাসের খোঁজে
    লেখক : লস্ট মডেষ্টি
    সম্পাদনা : আসিফ আদনান
    প্রকাশক : ইলমহাউস

    ▪︎ রিভিউয়ার : মুহাম্মাদ তামীমুল ইহসান

  3. আব্দুর রহমান

    মানুষকে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। এই ইচ্ছাশক্তি কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য আমানত স্বরুপ। এই আমানতের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া সম্ভব। কিন্তু মানুষের স্বভাব চরিত্র স্বাধীন হওয়ায় কিছু মানুষ আল্লাহর দেখানো পথ থেকে সরে যেতে শুরু করে। তাদেরকে পেয়ে বসে সমাজের অশ্লীলতা, খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ, সহ নানা রকম ইস্যু। বর্তমানে সমাজে প্রত্যেক মানুষের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে স্মার্টফোন। সেই স্মার্টফোনে থাকছে আইটেম সং ও পর্ণোগ্রাফির রগরগে সব দৃশ্য। পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে যৌবনের তপ্ত জ্বালা মেটাতে সমাজের মানুষগুলো জড়িয়ে পড়ছে হস্তমৈথুন, সমকামিতা ও ধর্ষণ সহ ভয়ংকর সব পাপকার্যের সাথে।
    পর্ণোগ্রাফির আসক্তি যে কতটা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে তা একটু বাস্তবতার দিকে তাকালেই লক্ষ্য করা যায়। পৃথিবীতে যত ধর্ষণ সংঘটিত হয় তার পেছনের মূল কারন হলো এই পর্ণোগ্রাফি।
    বৈজ্ঞানিক ভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পর্ন/চটিগল্প মানুষের মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটায়, মানসিকতা দুষিত করে, স্বাভাবিক চিন্তাশক্তি নষ্ট করে।  আবার হস্তমৈথুনের ফলে নষ্ট হচ্ছে যৌন আকাঙ্ক্ষা, স্বাস্থ্য, মেধা ও  আত্মবিশ্বাস। ব্যাপকভাবে এর প্রভাব পড়ছে সমাজ ও সংস্কৃতির উপর। পর্ণ আসক্ত হয়ে যুবসমাজ আজ হতাশার কালো অন্ধকারে নিমজ্জিত।
    পর্ণ আসক্ত মানুষদের সেই নীল অন্ধকারের বেড়াজাল থেকে সমাজকে মুক্ত করে তার স্বরূপ তুলে ধরতে এগিয়ে এসেছে লস্ট মডেস্টি টিম। তাদের সম্মিলিত লেখার ফসল এই “মুক্ত বাতাসের খোজে” বইটি। বর্তমানে মানুষ জনপ্রিয় হওয়ার জন্য তো অনেক কিছুই করে সেটা বই প্রকাশ করের হোক বা অন্যকোন ভাবে। কিন্তু এই বইটি তার চেয়ে ব্যাতিক্রম কারণ বইতে কোন লেখকের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
    বইতে পর্ণ সমস্যার ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সমাজে পর্ন অ্যাডিকশনের  বাস্তব প্রতিচ্ছবি ও তার প্রতিকারের উপায় এতো সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে যা এককথায় অতুলনীয়। আমার জানা মতে, বাংলা ভাষায় এ বিষয়ে এটাই প্রথম বই।
    বইটির সম্পাদনা করেছেন আসিফ আদনান। এবং শারঈ সম্পাদনা করেছেন মুনিরুল ইসলাম ইবনু জাকির। যারা ইতোমধ্যে স্ব স্ব অঙ্গনে বই লেখা ও সম্পাদনার জন্য বেশ সমাদৃত।
    এক্ষনে আমি বইটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে কিছু আলোচনা করবো। ইনশাআল্লাহ-
    ,
    # সার-সংক্ষেপঃ- #
    বইটিকে মূলত দুই ভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করা হয়েছে । তার প্রথম ভাগ “অনিবার্য যত ক্ষয়” ও দ্বিতীয় ভাগ হলো “বৃত্তের বাইরে”।
    .
    ☸অনিবার্য যত ক্ষয়ঃ- ☸
    এই অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুন এর নানা ক্ষতিকর দিক। আলোচনা করতে গিয়ে লেখকগন রেফারেন্স দিয়েছেন  ইন্টারনেট এর বিভিন্ন লিংক ও পরিসংখ্যান থেকে শুরু করে গবেষনাধর্মী বিভিন্ন গ্রন্থের ।
    .
    * মাদকের রাজ্যে:- *
    পর্ণোগ্রাফি অনেকটা মাদকের মতই। মাদকের যেমন একবার নেশায় পরিণত হলে তা থেকে বের হওয়া অসম্ভব তেমনি পর্ণগ্রাফির নেশা একবার যদি কাউকে পেয়ে বসে তাহলে তার থেকেও বের হওয়া অসম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও পর্ণ আসক্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কের গঠন হবহু একই। মাদক যেমন সিগারেট খাওয়া দিয়ে শুরু হলেও শেষে হিরোইন কোকেন পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। তেমনিভাবে পর্ণগ্রাফি দেখার যাত্রা সাধারণ পর্ণ দিয়ে শুরু হলেও একসময় হার্ডকোর, সমকামী, শিশুপর্ণ এর মত জঘন্য জিনিসও দেখা শুরু করে।
    .
    * চোরাবালি:- *
    হস্তমৈথুনে আক্রান্ত কিছু মানুষের হাহাকারের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে এই অনুচ্ছেদে। হস্তমৈথুন আমাদের কি পরিমান ক্ষতি করছে তা হয়তো টেরই পাই না। কিন্তু যখন এর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারি তখন আর তেমন কিছুই করার থাকে না।
    .
    * হস্তমৈথুন: বিজ্ঞানের আতশ কাচের নিচে:- *
    আমরা যারা বলি একটু আধটু হস্তমৈথুন করলে কি আর ক্ষতি হবে? তাদের জন্যই এই পরিচ্ছেদটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিচ্ছেদে হস্তমৈথুনের কারণে মানুষের ব্রেইন, শরীর, ও মনের উপর কি কি প্রভাব পড়ে তা বিজ্ঞানের সাহায্যে বিভিন্ন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। হস্তমৈথুন একসময় মানুষকে করে তোলে অমনোযোগী, নষ্ট করে আত্নবিশ্বাস।
    .
    * ১০৮ টি নীল পদ্ম:- *
    এই পরিচ্ছেদে উঠে এসেছে পর্ণগ্রাফি সম্পর্কে ভয়াবহ কিছু তথ্য। যেমন-  পৃথিবীতে মানুষ প্রতি সেকেন্ডে গড়ে 28258 জন মানুষ পর্ণ দেখছে। University of Montreal এর গবেষকরা তো তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন যে জীবনে একবারও পর্ণ দেখেনি এমন মানুষ তারা খুজেই পাননি।
    পর্ণ দেখে এমন প্রতি দশজনের মধ্যে একজনের বয়স ১০ বছরের নিচে। এমন অনেক ভয়াবহ সব তথ্য রেফারেন্স সহ দেয়া আছে এই পরিচ্ছেদে।
    .
    * মৃত্যু? দুই সেকেন্ড দূরে:- *
    শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকেই গুগলে পর্ণ শব্দটি মাসে সার্চ করা হয় ০.৮ মিলিয়ন বারের বেশি। পর্ণ ওয়েবসাইট তো আছেই সেই সাথে ফটোকপি ও কম্পিউটারের দোকানগুলোতে তো রীতিমতো পর্ণের ছড়াছড়ি। তারা সেখান থেকে দেখতে পাচ্ছে বিভিন্ন পর্ণ। যাদের অধিকাংশই কিশোর।  সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছড়িয়ে পড়েছে সর্বনাশা পর্ণ। এই অবস্থা বন্ধ করার জন্য যদি এক্ষুণি পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তবে সবকিছু চলে যাবে নষ্টদের অধিকারে।
    .
    * নীল রঙের অন্ধকার:- *
    এখানে পর্ণগ্রাফি ও হস্তমৈথুনে আক্রান্ত কিছু মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা উঠে এসেছে। যাদের জীবনে এই পর্নগ্রাফি ও হস্তমৈথুন কোন কল্যান বয়ে আনে নি। জীবনকে করে তুলেছে হতাশাগ্রস্ত ও বিষাদময়।
    .
    * অদ্ভুত আধার এক:- *
    পর্ণগ্রাফির আরেকটি সংস্করণ হলো চটি গল্প। যেখানে যৌনতার বিভিন্ন দৃশ্যগুলো মিথ্যা ও রসালো লেখা দ্বারা বর্ণনা করা হয়। বস্তুত এইসব গল্প পড়া পর্ণভিডিও গুলো দেখার চাইতেও ক্ষতিকর। কেননা এতে দৃশ্যগুলো অনেক বেশি সময় ধরে মাথায় থাকে।  যা থেকে সহজে রেহাই পাওয়া যায় না।
    .
    * পর্দার ওপাশে:- *
    কোনো সিনেমা দৃশ্য যেমন একবারে শুটিং করা হয় না। বরং খন্ড খন্ড ভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে শুটিং করা হয়। এরপর একসাথে জুড়ে দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সিনেমা তৈরী হয়। তেমনিভাবে পর্ণগ্রাফিও একবারে শুটিং হয় না। এখানেও সবকিছু সিনেমার মতই করা হয়। তৈরী হয় রগরগে পর্ণফিল্ম। প্রতিটি পর্ন ভিডিওর ফ্যান্টাসির পেছনে লুকিয়ে আছে অনেক নরনারীর অসহায় আর্তনাদ, বুকের গভীর থেকে উঠে আসা দীর্ঘশ্বাস। পর্ণ অভিনেতা অভিনেত্রীরা এসব অভিনয় করতে গিয়ে কি দূঃসহ জীবন অতিবাহিত করেন তার পূর্ণ ধারনা পাওয়া যাবে এই অনুচ্ছেদে।
    .
    * অঙ্গার:- *
    এখানে উঠে এসেছে অন্ধকার জগতের কিছু বিকৃত রুচিসম্পন্ন মানুষের জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এসব ধর্ষক নারীদের বিকৃত করেই যেন মজা পেত।
    ধর্ষণের ভয়াবহতা এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে এর থেকে রেহাই পাচ্ছেনা স্কুল,কলেজ, পার্ক, সহ সকল অঙ্গন। ইদানীং বাংলাদেশেও ধর্ষণের ভয়াবহ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার অন্যতম কারণ হলো পর্ণ আসক্তি।
    .
    ☸ বৃত্তের বাইরে:- ☸
    এ অধ্যায়ে মূলত পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুনের ভয়ংকর থাবা থেকে পরিবার, সমাজ, সেই সাথে নিজেকে কিভাবে মুক্ত হওয়া যায় এ সম্পর্কে ১৩ টি পরিচ্ছেদের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে। যথা-
    .
    * লিটমাস টেস্ট:- *
    এই পরিচ্ছেদে মানুষের পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বস্তুত কেউ পর্নগ্রাফিতে আসক্ত কি না তা নিজে নিজেই বোঝার জন্য ৫ টি প্রশ্নের অবতারণা করা হয়েছে। প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি হ্যা হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনি পর্ণগ্রাফিতে আসক্ত । কি সেই প্রশ্ন? জানতে হলে তো বইটি পড়তেই হবে।
    .
    * বাড়িয়ে দাও তোমার হাত:- *
    দিনশেষে পর্ণগ্রাফির বিরুদ্ধে লড়াইটা একান্তই নিজের সাথে। নিজের পর্ণ আসক্তির বিরুদ্ধে যদি নিজেই প্রতিরোধের হাত বাড়িয়ে দিই তাহলেই কেবল এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে আল্লাহর উপর ভরসা রাখার বিষয়টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
    .
    * ব্রেক দ্যা সার্কেল:- *
    প্রথম পরিচ্ছেদ থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে আপনি পর্ণগ্রাফিতে আক্রান্ত কি না । এবার দেখানো হবে কি করে এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসবেন। তার প্রথম পদক্ষেপ হলো মোবাইল, ল্যাপটপ সহ সবকিছু থেকে পর্ণ ভিডিও ডিলিট করতে হবে। সব পর্ণ সাইট ব্লক করতে হবে। খারাপ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। কাছের কারো সাথে এ নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহর ইবাদত করার দিকে পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত করে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলতে হবে।
    .
    * ফাদ:- *
    পর্ণ আসক্তদের জন্য এই পরিচ্ছেদের আলোচনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। কখনো কখনো হয়তো ব্যর্থ হবেন। উত্তেজনায় পর্ণ দেখে হস্তমৈথুন করে ফেলবেন। এসময় হতাশ হওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে ব্যর্থতা মানেই কিন্তু শেষ নয়। বুঝতে হবে শয়তান মানুষকে প্রতি পদে পদে পর্ণগ্রাফিতে আসক্ত করার জন্য ফাদ বিছিয়ে রেখেছে। এসব ফাদে কখনো পা দেওয়া যাবে না। শয়তানের ফাদে পা না দেওয়ার জন্য এই পরিচ্ছেদে বেশকিছু টিপস ফলো করতে বলা হয়েছে।
    .
    * বাড়িয়ে দাও তোমার হাত:- *
    এখানেও পর্ণগ্রাফি থেকে বেচে থাকার জন্য বিভিন্ন টিপস ফলো করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
    .
    * দুয়া তো করেছিলাম:- *
    আল্লাহর কাছে দোয়া তো করেছিলাম তবুও আবার ভুল করলাম কেন? তাহলে আল্লাহ মনে হয় আমার দোয়া কবুল করেনি? এই ভাবনা ভুলেও মনের মাঝে উদয় হতে দেয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে এই পাপ থেকে রক্ষা পেতে হলে দুআ হলো প্রধান হাতিয়ার। আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া যাবে না। তাই দুআ করতে থাকুন। আপনার দুআ বৃথা যাবে না। ইনশাআল্লাহ-
    .
    * ও যখন পর্ণ আসক্ত:- *
    এ পরিচ্ছেদে আপনার স্বামী বা স্ত্রী পর্ণ আসক্ত কি না তা বুঝার জন্য কিছু লক্ষণের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সেই সাথে পর্ণ আসক্তি থেকে উত্তরণের উপায়ও বলে দেয়া আছে।
    .
    * আমার সন্তান যখন পর্ণ দেখে:- *
    আমাদের সন্তান পর্ণগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়লো কি না তা জানা যাবে এই শিরোনামের লেখা পড়ে। সাথে রয়েছে সন্তানকে পর্ণগ্রাফি থেকে বিরত রাখার উপায় সম্পর্কে।
    .
    * বিষে বিষক্ষয়:- *
    মোবাইল ও পিসিতে পর্ণ সাইট গুলো ব্লক করার জন্য কিছু নিয়মকানুন ও পর্ণ ব্লক করা যায় এমন কিছু এপস সম্পর্কে বলা হয়েছে এই পরিচ্ছেদে।
    .
    * আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেবো:- *
    এখানে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে পর্ণগ্রাফি ও হস্তমৈথুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। আমরা অনে সময় কোন পাপ করে দেদারসে লোকের সামনে বলে বেড়াই। কিন্তু আমাদের বুঝা উচিত যে এতে করে আমাদের পাপের বোঝা আরো বৃদ্ধি পায়। বস্তুত নিজের কৃত পাপ গোপন রেখে আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়াতেই কল্যান নিহিত রয়েছে।
    .
    * রুপকথা নয়:- *
    পর্ণোগ্রাফি দেখা ও হস্তমৈথুন করার জন্য দুনিয়ার কোন আদালত  আপনাকে শাস্তি দেবে না । তাই শেষ পর্যন্ত আর যাই করুন না কেন পর্ণোগ্রাফি, হস্তমৈথুন সহ যাবতীয় কুকর্ম থেকে আল্লাহর ভয়ই আপনাকে বিরত রাখবে। তাই জাহান্নামের কঠিন আজাবের ভয়ে করুন এবং এসব পাপকার্য এড়িয়ে চলুন।
    .
    * মুক্ত বাতাসের খোজে:- *
    এটি বইয়ের সর্বশেষ পরিচ্ছেদ। এখানে বর্ণিত হয়েছে কয়েকজন পর্ণ আসক্ত মানুষের ফিরে আসার গল্প। তারা যেহেতু ফিরে আসতে পেরেছে সুতরাং আপনিও পারবেন। প্রয়োজন কেবল একটু সদিচ্ছার। সুতরাং আপনিও চলে আসুন পর্ণগ্রাফির বিভীষিকাময়  অন্ধকার জগত ছেড়ে মুক্ত বাতাসের খোজে।
    .
    # স্বরণীয় কিছু উক্তি #
    (১) সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত নারীর কাছে পুরুষেরা ঋণী। জীবনের বন্ধুর পথে নারী বন্ধু হয়ে হাত ধরে রেখেছিল বলেই না পুরুষ পেরেছে জীবনের বন্ধুর পথে চলার সাহস।
    (২) পর্ণ আসক্তির যুদ্ধে বার বার পরাজিত হওয়া মানেই কিন্তু হেরে যাওয়া নয়। আপনি হেরে যাবেন সেদিনই, যেদিন শয়তানের প্ররোচনায় পরে হস্তমৈথুন, পর্ণ-আসক্তি থেকে বাচাঁর চেষ্টা ছেড়ে দেবেন।
    (৩) যারা পর্ণ দেখে তাদের পক্ষে একজন যৌনসঙ্গিনীতে তৃপ্ত হওয়া অত্যন্ত কঠিন। পর্ণের বৈশিষ্ট্যই হলো সাধারণ যৌনতার ব্যাপারে এক ঘেয়েমি সৃষ্টি করা। এমনকি আসক্ত ব্যক্তির কাছে একই ধরনের পর্ণও এক সময় একঘেয়ে লাগে।
    .
    # বইটি কাদের জন্য ও কি পাবেন? #
    (১) আপনি যদি পর্ণোগ্রাফির ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিজ্ঞানভিত্তিক ও রেফারেন্স সহ জানতে চান তাহলে বইটি আপনার জন্য।
    (২) যদি আপনি এগুলোতে আসক্ত হয়ে থাকেন এবং এর ভয়ংকর ছোবল থেকে মুক্ত হতে চান তবে বইটি আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে। পর্ণোগ্রাফিময় অন্ধকার জীবন থেকে নিষ্পত্তি লাভ করতে বইটি আপনাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে ।
    (৩) যদি আপনার স্বামী/স্ত্রী, সন্তান, সমাজের কেউ, বা কোন আপনজন পর্ণ আসক্ত  হয়ে থাকে আর আপনি তাদেরকে এর থেকে ফেরাতে চান তাহলে কি কি উপায়ে ফেরানো যায় তার টিপস গুলো জানতে হলে বইটি পড়ুন।
    ,
    # ব্যক্তিগত অনূভুতিঃ- #
    বইয়ের কভার, প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ও ভিতরের পাতা মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর। দামের দিক থেকেও সাশ্রয়ী। ব্যক্তিগত অনূভুতি যদি বলতে হয় তাহলে বলবো বইটি এককথায় অসাধারন। বইয়ের প্রতিটি পাতায় রয়েছে লেখকগণের কঠোর পরিশ্রমের ছোয়া।
    বইটি পড়ার পর বুঝতে পেরেছি সমাজে পর্ণগ্রাফির ভয়াবহতা ও ক্ষতিকর দিক আসলেই অনেক  । অথচ আমরা এই পর্ণোগ্রাফিকেই হেলাফেলা মনে করছি ।
    বই এর বিষয়সমূহ যে ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে তা গল্পও নয় আবার প্রবন্ধও নয়। বরং গল্পের আকারে শুরু হয়ে প্রবন্ধ তে রুপ নিয়েছে। এরপর সেই প্রবন্ধে যোগ হয়েছে অসংখ্য তথ্য, উপাত্ত ও রেফারেন্স। বই এর ভাষাশৈলী ও শব্দচয়ন দেখে মনে হয় এ যেন একজন দক্ষ সাহিত্যিকের লেখা। সুখপাঠ্য গদ্য ও অভিনব উপস্থাপন কৌশল পাঠককে আকৃষ্ট করে রাখবে বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
    বইটির প্রথম অংশ পড়ার সময় পর্ণ আসক্ত যেকোনো মানুষ এর ভয়াবহতার কথা জেনে নীরবে কাঁদবেন। চক্ষুদ্বয় অশ্রুসিক্ত হয়ে গড়িয়ে পড়বে অশ্রুফোটা। ভেসে উঠবে চারিদিকে হতাশার প্রতিচ্ছবি। কিন্তু দ্বিতীয় অংশ পড়েই পাঠক দেখতে পাবেন আশার আলো। কারন এখানেই আলোচিত হয়েছে পর্ণ আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় ও করণীয় সম্পর্কে। এ যেন বিভীষিকাময় অন্ধকার জীবনে এক পশলা বৃষ্টি, একটু মুক্ত বাতাসের সন্ধান ।
    এমন খুব কম বই আছে যার প্রতিটি বাক্য ভালো লাগার, প্রতিটি পাতায় মিশে থাকে জ্ঞানের ছোয়া ও শিক্ষণীয় মেসেজ ” মুক্ত বাতাসের খোজে ” বইটি তার মধ্যে অন্যতম।
    বইয়ের অনুচ্ছেদ্গুলো নামকরণ করার ক্ষেত্রেও লেখক যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। অনুচ্ছেদ গুলোর নামকরণ করেছেন আকর্ষণীয় শব্দ দ্বারা।”যেন অনুচ্ছেদের নাম দেখলেই পড়তে ইচ্ছা করে।
    সব মিলিয়ে বইটি খুবই ভালো এবং উপকারী।
    তবে বইটি ছোটদের জন্য পড়া উচিৎ নয়। কারণ বইতে এমন কিছু বিষয়ের আলোচনা আছে যা ছোটরা পড়লে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই বয়সন্ধিকাল থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষ বইটি একবার হলেও পড়ুন আর বিচরন করুন মুক্ত বাতাসে। শুধুমাত্র আপনি একা নয় পর্ণোগ্রাফির ভয়াল থাবায় জর্জরিত পুরো সমাজ। তাই পর্ণোগ্রাফির বিরুদ্ধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে রুখে দাড়ানোর চেষ্টা  করুন।

    # সমালোচনাঃ- #
    একটি বই প্রকাশের পিছনে লেখক, সম্পাদক ও প্রকাশকের অসংখ্য রাত জাগার ইতিহাস থাকে, বইটিকে নির্ভুল করার জন্য। বইটিকে পঠনোপযোগী করতে প্রকাশনী যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। আল্লাহ তাদের খেদমত কবুল করুক। তারপরও কিছু ভুলভ্রান্তি থেকেই যায়। যা অনিচ্ছাকৃত। যেমন –
    (১)বইয়ে কিছু মুদ্রণজনিত ত্রুটি চোখে পড়েছে। হয়তো এটা প্রথম সংস্করণ হওয়ার কারনেই । আশা করি পরবর্তী সংস্করণে এগুলো সংশোধন হয়ে যাবে।
    (২) এত সুন্দর একটি বই অথচ তার কভার পেপারব্যাক। বইটি তো আর আমি একা নয় বরং আমার পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই বইটি হার্ডকভার হলে ভালো হতো।
    (৩) বইয়ের লেখার ফন্ট সাইজ ছোট মনে হয়েছে। ফন্ট সাইজ আরেকটু বড় হলে পড়তে সুবিধা হতো।

    # শেষ কথাঃ- #
    পরিশেষে বলতে হয় বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী পর্ণোগ্রাফি নিয়ে এত সুন্দর একটি বই পাঠকের হাতে পৌছে দেয়ার জন্য লেখক, প্রকাশক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন।
    সেই সাথে দোয়া করি আল্লাহ যেন এই বইয়ের মাধ্যমে পর্ণ আসক্ত  মানুষগুলোকে থেকে বাঁচার তাওফিক দান করেন।

  4. সিরাজাম বিনতে কামাল

    প্রথমেই বলব অবশ্যই অবশ্য পাঠ্য একটি বই “মুক্ত বাতাসের খোঁজে”। আমি চাই সবাই বইটি সংগ্রহ করুক, পড়ুক, চিন্তা করুক, সচেতন হোক, অন্যকে পড়তে উৎসাহ দিক। ইন শা আল্লাহ!

    🍀 প্রারম্ভিকা:
    ———————

    কখনো জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে, কখনোবা বেলকনি মাড়িয়ে, আবার কখনো চিলেকোঠায়, কিংবা উঠোন পেরিয়ে দু’পা!

    হন্যে হয়ে খুঁজি এক্টু মুক্ত বাতাস!

    কিন্তু মুক্ত বাতাসের সন্ধান কি আমরা পাই! উন্নতির নামে অবনতি, শিক্ষিত নামে অশিক্ষিত, ভদ্রতার আড়ালে অভদ্রতা, মুখোশের আড়ালে অমানুষদের বিষবাষ্প যেনো ছড়িয়ে গিয়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।

    ছ’বছরের বালিকা কিংবা ষাট বছরের বৃদ্ধা কেউ নিরাপদ নয় আমাদের এই ডিজিটাল পৃথিবীতে।

    🍀বই রিভিউ:
    ———————

    আমরা ছুটে চলেছি উন্নত জীবনের স্বর্ণশিখরে। বুদ হয়ে আছি অজানা এক নেশায়। এই নেশা কেড়ে নিয়েছে আমাদের বিবেক, মূল্যবোধ, স্বস্তি, আত্নতৃপ্তি, সুখ। এই যে আমরা হারিয়ে ফেলেছি অনেক কিছু, এইটা অনুধাবন করার ক্ষমতাও কেড়ে নিয়েছে এই নেশা।

    হন্যে হয়ে মুক্ত বাতাস কে না খুঁজে! একটা কলুষিত মন কিবা একটা সফেদ মন! পার্থক্য হচ্ছে সফেদ মনের অধিকারী ব্যক্তি মুক্ত বাতাসটুকু অনুভব করতে পারে। আর কলুষিত মনের ব্যক্তি তা খুঁজেই পায়না।

    কেন এই রকমফের! কেন যে সম্পর্ক হবার কথা ছিল ভালবাসার, শ্রদ্ধার, পবিত্রতার, দায়িত্বের, বিশ্বস্ততার, সেই সম্পর্ক হয়ে গেলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা, স্বার্থপরতা, প্রতারণা, ছলাকলার আর লেনদেনের।

    “প্রশ্নের ওপর প্রশ্ন ছুৃড়ে দিন নিজের বিবেককে। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হন্যে হয়ে ঘুরুন। প্রশ্নের উত্তর ধরা দিবেই।”

    “জেগে ওঠুক আমাদের মানবীয় জগত। অনুশোচনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে চোখের পানি হৃদয় পোড়াতে পোড়াতে নামুক। সে পোড়া ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জন্ম নিক এক “যোদ্ধা”, এক “আপনি”, এক “আমি”।”

    —ডা. শামসুল আরেফীন

    🍀বই অভ্যন্তরে:
    ———————–

    পুরো বই তথ্য দিয়ে ভরপুর। এত অজানা আর অবিশ্বাস্য সব তথ্য, অপ্রিয় কিছু সত্য রয়েছে যে আপনি শিউরে ওঠবেন। কখনো মন খারাপ হবে, কখনো ঘৃণা; কখনো ভয়ে কুঁকড়ে যাবেন আবার কখনো একটা দীর্ঘশ্বাস! কখনো মন থেকে চাইবেন “নীল অন্ধকারে আটকে পড়া ভাইবোন হারিয়ে যাওয়ার আগে ফিরে আসুক আলোর জগতে। খুঁজে নিক মুক্ত বাতাস।”

    বইটা মূলত পর্ণোগ্রাফি নিয়ে।
    কিভাবে একজন এই পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ে, এর ক্ষতিকর দিক কী, এর প্রভাবে সমাজে কী কী সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, এর সহজলভ্যতার পেছনে কারণ কী, এই নেশা কাটানোর উপায়, প্রতিকার, প্রতিরোধ সবকিছুই এই বইয়ে আলোচিত হয়েছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বই আমি মনে করি।

    🍀কারা পড়বেন, কেনো পড়বেন:
    ———————————————-

    আমি মনে করি বইটা সবার পড়া উচিত। যারা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত না তারা পড়বেন পর্নোগ্রাফির ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে। নিজের আপনজনকে এই জীবন, মানবিকতা, বিবেকবিধ্বংসী ভাইরাস থেকে দূরে রাখতে চাইলেও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কে আপনার জানা উচিত।

    বইটা পড়া উচিত এজন্যই কারণ, বই থেকে আপনি জানতে পারবেন মেয়েদের ক্ষেত্রে ছেলেদের সাইকোলজি কেমন কাজ করে, ফ্রি-মিক্সিং এর ভয়াবহতা, ক্যামেরার পেছনে ঘটে যাওয়া ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির গল্পগুলো, একেকটা মেয়ের স্বপ্ন ভাঙার আর্তনাদগুলো জানার জন্য হলেও বইটি পড়া উচিত।

    আর যারা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত তারা তো অবশ্যই বইটা পড়বেন। কারণ, আপনার জানা উচিত আপনার একটা বাটন ক্লিকের পেছনে কতশত আর্তনাদ রয়েছে। আপনার জানা উচিত আপনি কতটা বোকাস্বর্গে বাস করছেন। আপনার জানা উচিত আপনাকে কতটা ঘৃণা করে ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির আপনার পছন্দের নায়িকারা।

    🍀বইয়ের যা ভালো লেগেছে:
    —————————————–

    ফেসবুক থেকে কীভাবে এক ক্লিকে ছেলেদের সকল আইডি বা মেয়েদের সকল আইডি পাওয়া যায় এবং আনফ্রেন্ড করা যায় তার আলাদা লিংক দেওয়া আছে। যা খুবই ভালো লেগেছে। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর তথ্যবহুল আলোচনা বইয়ে রয়েছে যা আমাদের জন্য খুবই উপকারী।

    🍀পরিশেষে:
    ——————

    আপনজনের সাথে সুখে থাকার স্বপ্ন কে না দেখে! কিন্তু যখন কেউ জানতে পারে তার আপনজন অমানবিক, নোংরা কিছু কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে আছে তখন তার মনের অবস্থা কেমন হয় তা সহজেই অনুমেয়।

    আমরা হয়তো তার বিপথে যাওয়ার জন্য তাকে খুব বকাঝকা করি, নিজেকে ব্লেইম করি, ভাগ্যকেও ব্লেইম করে বসি। কিন্তু এই বকাঝকা করা, নিজেকে বা ভাগ্যকে ব্লেইম করা কি তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে অন্ধকার থেকে আলোতে! না। বরং সে নিজেই আরো হতাশার সাগরে হাবুডুবু খায়। আপনার, আমার সাথে তার দূরত্ব আরো বেড়ে যায়।

    আমাদের আপনজনের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বপূর্ণ। যেনো খুব সহজেই সে তার সমস্যাগুলোর কথা আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারে। যেনো সে বাহিরের চেয়ে বাসায় ফ্যামিলির সাথে সময় কাটাতেই বেশি পছন্দ করে। আর অবশ্যই ছেলে-মেয়ে উভয়েরই বন্ধু নির্বাচনে যথেষ্ট সচেতন হওয়া উচিত।

    বইটা পড়ে হয়তো কেউ ফিরে আসতে পারবে অন্ধকার থেকে আলোর জগতে। খুঁজে পাবে মুক্ত বাতাস।

  5. Meher Afroz

    📗বুক রিভিউ📕

    বুক রিভিউ
    বইঃ মুক্ত বাতাসের খোঁজে
    লেখকঃ টিম লস্ট মডেস্টি
    সম্পাদনাঃ আসিফ আদনান

    ➤বাড়ী একদম ফাঁকা। ছেলেটি আস্তে করে নিজের বেডরুমে ঢুকে পিসি অন করলো এবং স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো স্ক্রিনের উপর।একটার পর একটা নগ্নদেহ ভেসে উঠছে স্ক্রিনে। হরমোনের নেশায় বুদ হয়ে পাশাপাশি চলছে মাস্টারবেশন।
    ➤সদ্য বিবাহ হয়েছে।স্বামী তার স্ত্রীকে বাধ্য করছে ডিভাইসের স্ক্রিনে ভেসে থাকা নগ্ন নারীটির মতো আচরণ করতে।নয়ত, ডিভোর্স!
    ➤টিফিন টাইমে স্কুলের প্রাঙ্গণে বসে তিন তরুণ সফ্টকোর পর্ন দেখছে।শত শত গিগাবাইট ভর্তি পর্ন অথচ, বন্ধুদের চাহিদা আরো নতুন কিছু!
    ➤টিচার তার ক্লাস ফোরের ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে।পুলিশ তদন্তে উদ্ধার করেছে মেমোরি ভর্তি পর্নগ্রাফি।

    যুবসমাজ যে অশ্লীলতার কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তার মামুলি উদাহারণ উপরোক্ত ঘটনাগুলো । এই পর্নোগ্রাফি ও মাস্টারবেশন এমন এক আসক্তির নাম যা সাইলেন্ট কিলারের মতো অন্ধকারের অতল গহ্বরে পতিত করছে যুব সমাজকে। সাময়িক এই ‘মজা’ শেষ করে দিচ্ছে আমাদের জীবন। পদে পদে মরছে শত শত পবিত্র প্রাণ। নিজেকে দুনিয়ায় এবং আখিরাতে করছে শেষ।

    সেই নেশায় পুড়ে দুনিয়াতে’ই ছাই হয়ে যাওয়া যে প্রাণগুলো এ কাজের ভয়াবহকতা অনুভব করতে পারছে।আবার যারা মাঝপথে থেকে আসক্তির ভেলায় ভাসছে।তাছাড়া এখনও যারা সেই অন্ধকার পথে পা দেয়নি তবে এর সাথে পরিচিত বা যাওয়ার সূচনা করেছে তাদের সকলকে ‘লস্ট মডেস্টি টিম’ ব্যকুল হয়ে ডাকছে। তাঁরা চাইছে ঐ নীল অন্ধকারের দুনিয়া থেকে তাদের ফিরিয়ে এনে মুক্ত পৃথিবীতে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে শেখাতে। তাই তো পাঠকের হাতে তুলে দিয়েছেন ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ বইটি।যদি বলা হয়, ‘বর্তমানে এই বইটি অক্সিজেনের মত গুরুত্বপূর্ণ’ তাহলে এক বিন্দু ভুল বলা হবে না।

    বইটিতে যা আছেঃ—

    বইটির প্রথম অর্ধেকে বলা হয়েছে পর্ণগ্রাফি, হস্তমৈথূন এবং চটিগল্পের প্রভাবে যুব সমাজকে তিলে তিলে খুন করার কাহিনী। এবং শেষ করা হয় মুক্ত বাতাসের সন্ধান দেওয়ার মাধ্যমে। কীভাবে একজন হার্ডকোর পর্ন- আসক্ত তরুণ/তরুণী নিজেকে এই ঘৃণিত কাজ থেকে বের করে আনবে তার উপায় বাতলে দেওয়ার মাধ্যমে।
    বইটির পরতে পরতে আছে মুক্ত বাতাসের হাতছানি। এই সুশীল সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে আজ যে নীল বিষের মহা- মারি ছড়িয়ে গেছে, যার বিষাক্ত ছোবলে আহত আজ নব প্রজন্ম, তারই কিছু প্রতিষেধক এই বই।
    এক চিমটি আলো অনেক সময় কারো অন্ধকারের সাথি হয়। কয়েক লাইনের শব্দ মালা কখনো বদলে দেয় কারো চেতনা।

    পাঠ্যানুভূতিঃ—

    যেখানে শতকরা ৭০ ভাগেরও বেশি তরুণ-তরুণী আজ বিকৃত যৌনাচার এবং হস্তমৈথুনের সাথে জড়িত।যেখানে নেই কোনো সামাজিক নিষেধাজ্ঞা,সরকারি প্রচার- প্রচারণা বা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিষেধাজ্ঞা। সেখানে লস্ট মডেস্টি টিমের এমন সেমিনার+ লেখালেখি এবং এই বইটা সত্যিই আশাজাগানিয়া। এই পর্নোগ্রাফি অক্টো -পাসের মতো যুবকদের আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে এবং হাইড্রার মতো করে বারংবার ভয়াল রূপ নিয়ে ফিরে আসে। ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকার থেকে অন্ধকারে।এরকম একটা সময় ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ বইটির প্রতিটি লাইন যেন সমাজের বাস্তব রূপকে চিত্রিত করে তুলেছে। লস্ট মডেস্টি টিম আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে এ পাপের ইতি ঘটানোর জন্য। এমন মুহূর্তে আমরা সকলে যদি লজ্জায় মুখ ঢেকে রাখি।সব জেনে বুঝেও অতিরিক্ত সাধুপনা করি, তাহলে সুদূর ভবিস্যতে মানব অস্তিত্ব হুমকির মুখে পতিত হবে।তাই, আপনি- আমি আসক্ত না হলেও এর ভয়াবহকতার বিপরীতে প্রচারণা চালাতে হবে পুরো দমে।এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।
    আমি একজন সচেতন পাঠিকা হিসেবে সবাইকে সাজেস্ট করবো, বইটা নিজে পড়ুন।অপরের হাতে তুলে দিন।নিজে কিনে পর্ন আসক্ত বন্ধুটিকে হাদিয়া দিন।এ বিষয়ে সৃষ্টি করুন সর্বোচ্চ গনসচেতনতা।

    সর্বপরি এটা বলবো, এই অসাধারণ বইটির পেছনে যাদের পূর্ণ অবদান রয়েছে মহান আল্লাহ তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।আমিন।

    রিভিউদাতাঃ Meher Afroz

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart

Sign in

No account yet?

ধন্যবাদ, আপনার প্রি-অর্ডারটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আপনার যে কোন প্রশ্ন অথবা অর্ডারে কোন পরিবর্তনের জন্য ০১৮৪৪২১৮৯৪৪ নাম্বারে কল করুন ।