মেঘ, রোদ্দুর আর বৃষ্টি—একই আকাশে তাদের জন্ম; অথচ কতটা আলাদা তাদের বিচরণ, কতটা স্বতন্ত্র তাদের অস্তিত্ব। রৌদ্রময়ীর প্ল্যাটফর্মটাও যেন এক চিলতে আকাশের মতো। একঝাঁক নারী সে আকাশে বিচরণ করে যাচ্ছে, অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে লেখনীর মাধ্যমে। কেউ হয়তো মেঘের ভেলায় ভাসিয়ে দিচ্ছে সুখের যত অনুভূতি, কেউ আবার রোদ ঝলমলে লেখায় আলোকিত করে যাচ্ছে, কেউ আবার কষ্টগুলোকে ঝরিয়ে দিচ্ছে বৃষ্টির মতো। সেই একই আকাশে, রৌদ্রময়ীর আকাশে। এখানে অজস্র নারীর দৃষ্টিভঙ্গি এক হয়ে মিশেছে একটি মাত্র পরিচয়ে; মুসলিম নারীর পরিচয়ে।
রৌদ্রময়ীরা নিজেদের অনুভূতির প্রকাশ ঘটায় নিছক শখের বশে নয়, বরং মানুষে মানুষে দূরত্ব ঘোচাতে। যে মেয়েটির সকাল শুরু হয় হেঁশেলে, আর যে মেয়েটি আলো ফুটতে-না-ফুটতেই বাড়ির চৌকাঠ পেরোয়, তাদের জীবন কি এক? তাদের অনুভূতি কি এক? তাদের সুখ, দুঃখ, দীর্ঘনিঃশ্বাস কোথাও কি মিলে যায়? অথবা তাদের অমিলটাই বা কোথায়? কিংবা নারীর জীবন কি শুধু কেটে যাবে নিজ গোত্রের চাওয়া-পাওয়ার হিসেব মেলাতেই? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর মেলাতেই যেন রৌদ্রময়ীর আবির্ভাব।
এ প্ল্যাটফর্মের কল্যাণে কখনো বিপরীত মেরুর দুই নারী হঠাৎ করে আবিষ্কার করে বসে তাদের দূরত্বটা কেবলই বাহ্যিক। কখনো-বা এক মেরুর বাসিন্দারা উপলব্ধি করে তাদের চিন্তা-চেতনার ফারাকটুকু। তবুও সব রৌদ্রময়ী যেন একটি প্রশ্নে এসে এক হয়ে যায়—‘ইসলাম কী বলে?’ হ্যাঁ, ‘সমাজ কী বলে’ প্রশ্নের পরিবর্তে ‘ইসলাম কী বলে’—এ প্রশ্নকেই নাটাই বানিয়েছে রৌদ্রময়ীরা, আর উড়িয়ে দিয়েছে তাদের ইচ্ছেঘুড়ি।
রৌদ্রময়ীদের সেই ইচ্ছেঘুড়ি আকাশে ভেসে ভেসে পৌঁছে যাচ্ছে পাঠকের হৃদয়ে; ভাসছে মেঘ হয়ে, আলোকিত করছে রোদ্দুর হয়ে, ঝরছে বৃষ্টি হয়ে। আমরা এক চিলতে আকাশ ধার করে এনেছি রৌদ্রময়ী হয়ে, রৌদ্রময়ীদের জন্যে।…
আব্দুর রহমান –
রৌদ্রময়ী নামক ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে নিজেদের লেখা ইসলামি গল্প ও প্রবন্ধগুলো প্রকাশ করে থাকেন কিছু দ্বীনি বোন। সেখান থেকে বাছাই করা কিছু গল্প নিয়েই রচিত হয়েছে “মেঘ রোদ্দুর বৃষ্টি” বইটি।
.
➤ কারা এই রৌদ্রময়ী ?
আগেই বলা হয়েছে রৌদ্রময়ী হচ্ছেন রৌদ্রময়ী’ নামক ফেসবুক পেইজের কিছু দ্বীনি বোন। যারা নিজেরদের পরিচয় দিয়েছেন ঠিক এভাবে “রৌদ্রময়ী হচ্ছেন সেই নারীরা যারা তাদের লেখার মাধ্যমে ইতিবাচক মানসিকতার আলো ছড়িয়ে দেন। যেখানে থাকে না স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারী জীবনের দিকে আহ্বান। বরং তাদের লেখায় আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সামগ্রিক জীবনযাত্রা ও সামাজিক সম্পর্কগুলোর প্রতি দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায়” ।
.
➤ কি আছে শেষ বিকেলের রোদ্দুর বইতেঃ-
বইটি সাজানো হয়েছে রৌদ্রময়ীদের লেখা আলাদা শিরোনামে ৩৩ টি গল্পের মাধ্যমে। যার প্রতিটি গল্পের প্লট, চরিত্র আলাদা। প্রত্যেক লেখিকা তাদের দাম্পত্য খুঁটিনাটি, পরিবার নিয়ে অমূল্য ভাবনা গুলো তুলে জীবন থেকে নেয়া উপলদ্ধি থেকে। আবার কখনো গল্পের আচড়ে তুলে এনেছেন তাদের জীবন থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতার গল্প ও সমাজের নানা অসঙ্গতির কথা।
.
➤ বইটি কারা পড়বেন?
যারা গল্প পড়তে ভালোবাসেন। গল্পের মাধ্যমে ইসলামি জ্ঞান আহোরণ করতে চান। ভাবনার পরিধি বিস্তৃত করতে চান। তারা বইটি অবশ্যই পড়ুন। কেননা বইটি আপনাকে গল্পের মাধ্যমে ইসলামী জ্ঞান শিক্ষা দিবে। ইসলামের প্রতি আরো গভীরভাবে আনুগত্য করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। অন্তরে এনে দেবে অনাবিল প্রশান্তি। সেই সাথে জানতে পারবেন আমাদের দ্বীনি বোনরাও ইসলাম সম্পর্কে কত সুন্দরভাবে ভাবতে পারে।
.
➤ আমার অনূভুতিঃ-
বইয়ের সবগুলো গল্পই ছিল শিক্ষামূলক। প্রতিটি গল্পেই কুরআন হাদীসের মিশেল ও জীবনের উপলদ্ধিতে যুক্ত হয়েছে অনুসরণীয়, শিক্ষণীয় উপাদান। বইটি পড়ার পর যেকোন পাঠকের আবার নতুন করে পড়তে ইচ্ছা করবে বলে আমার বিশ্বাস।
.
➤ শেষ কথাঃ-
পরিশেষে একটাই কথা বলবো, আসুন ইসলামি বই পড়ি, তাহলেই গঠিত হবে একটি আদর্শ ইসলামি সমাজ। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাক সব মানুষের অন্তরে।