অন্ধকার রাতের ন্যায় একের পর এক ফিতনায় ছেয়ে যাচ্ছে আমাদের পৃথিবী। চোখ ধাঁধানো ফিতনার আক্রমণে আমরা হারিয়ে ফেলছি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকরণ ক্ষমতা। কারা আল্লাহর বন্ধু আর কারা শয়তানের বন্ধু, তা চিহ্নিত করতে গিয়ে ধোঁকায় পতিত হচ্ছি আমরা। আমরা আজ শয়তানের দোসরদের আল্লাহর বন্ধু ভেবে বসি, আর আল্লাহর বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হই।
আজ থেকে শত শত বছর পূর্বে মহান ইমাম শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যা (রহ.) এই ফিতনার মোকাবিলায় একটি কালজয়ী গ্রন্থ রচনা করে গিয়েছেন। ‘আল-ফুরকান বাইনা আউলিয়া-উর-রহমান ওয়া আউলিয়া-উশ-শাইত্বান’ নামের সেই গ্রন্থে তিনি আলোচনা করেছেন কারা আল্লাহর বন্ধু আর কারা শয়তানের বন্ধু। ঠিক কোন কোন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হলে একজন ব্যক্তি আল্লাহর বন্ধু হয়ে ওঠে, আর কোন কোন বৈশিষ্ট্যের কারণে একজন ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু হয়ে যায়, সেসবের বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি সেই গ্রন্থে। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি সেটিরই বাংলা অনুবাদ।
এই বইটি পড়ে আমরা আল্লাহর বন্ধু আর শয়তানের বন্ধু চিহ্নিত করার বেশ কিছু সূত্র জানতে পারব। ঘোর অমানিশার এই সময়ে বইটি আমাদের জন্য ‘ফুরকান’ হবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা ইন শা আল্লাহ।
Amit Hasan –
● বই- ফুরকান (রহমানের আউলিয়া ও শয়তানের আউলিয়া চিহ্নিতকরণের সূত্রাবলি)
● কিছু কথা-
দুনিয়াবী জীবনে বিভিন্ন তাগিদে আমাদের একে অন্যের সংস্পর্শে আসতে হতে হয় এটি সৃষ্টিশীল প্রক্রিয়া। ভালো মানুষের সংস্পর্শে আসলে আমরা যেরকম ভালোর দ্বারা প্রভাবিত হই ঠিক তেমনি খারাপ মানুষের সংস্পর্শে আসলে তাদের মন্দ দিকগুলো আমাদেরকে প্রভাবিত করে। ইসলামি দৃষ্টিতে অবশ্যই মন্দ কাজ পরিতাজ্য। তাই আমাদের উচিত এমন মানুষদের সংস্পর্শে আসা যাদের নিজেদের জীবন ইসলামী ধারায় আলোকিত। আর তাদের সংস্পর্শে আমরাও যেন তাদের আলোকচ্ছটায় নিজেদের জীবনকে আল্লাহর রঙে রাঙাতে পারি।
● বই পর্যালোচনা-
বক্ষ্যমাণ গ্রন্থ “ফুরকান” আমাদের সেই কাজটাকে আরো সহজ করে দেবে। বইটি ১৫ টি অধ্যায়ে সুসজ্জিত। আমরা কাকে আমাদের বন্ধু করে নেবো কুরআন হাদিস ও সালাফগণের কথামালার আলোকে তা তুলে ধরা হয়েছে। ভালো ও খারাপ বন্ধু আমরা কি রূপে চিহ্নিত করবো সেই উপায়গুলো বাতলে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা কোরআনকে যেমন আমাদের জীবনের দিকনির্দেশনা প্রদানে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী রূপে নাযিল করেছেন। ঠিক তেমনি এই গ্রন্থটিতে সত্য আউলিয়ার সাথে মিথ্যাবাদী আউলিয়ার পার্থক্য, আউলিয়ার প্রকারভেদ, আউলিয়ার মর্যাদার স্তরভেদ, বন্ধুত্ব ও শত্রুতার ভিত্তি, আউলিয়া হবার শর্ত গুলো যথাযথ রেফারেন্স সহিত নিরূপণ করা হয়েছে। যা একজন মুসলিমকে ভুল পথ মাড়িয়ে সঠিক পথের দিকে ধাবিত করবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ এবং রাসূলের সাথে আমাদের সম্পর্ক উন্নয়নে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা করছি। কারণ তাঁদের সাথে সুসম্পর্কই আমাদের আখিরাতের পথ সুগম করবে। এছাড়া বইটিতে মুমিনের মর্যাদা, হাকীকত ও শরীয়ত,তাকদীরের হাকীকত বিষয়ক কিছু আলোচনা করা হয়েছে।
● পরিশেষে-
বর্তমান মুসলিম সম্প্রদায় অন্ধকারে নিমজ্জিত তারা তাদের পথের দিশা হারিয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য বাদ দিয়ে দুনিয়াবী সফলতার জন্য আল্লাহর বিরুদ্ধ শক্তি ঘোর ইসলামের শত্রু গুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করছে যা মোটেও কাম্য নয়। এই বইটি আশা করি প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তিকে চিন্তার খোরাক জোগাবে কাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করা উচিত এবং কাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রয়োজন ইনশাআল্লাহ।