fbpx
আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার (হার্ডকভার)
আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার (হার্ডকভার)

আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার (হার্ডকভার)

Author : মুসা আল হাফিজ
Category : ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য


আমরা জানি, কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছে। অথচ মুসলমানরা আমেরিকা আবিষ্কার করেছিল কলম্বাসের অনেক আগে। কলম্বাস বরং মুসলমানদের তৈরিকৃত পথ দিয়েই ভুলক্রমে গিয়ে উঠেছে আজকের খ্রিস্টান আমেরিকায়।

এই বইতে আছে হাজার বছরের আমেরিকান মুসলমানদের সংক্ষিপ্ত কালপঞ্জী। বিশ্বজুড়ে প্রচলিত ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জকারী এ বই মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের অলিখিত এক রাজ্য আবিষ্কার করেছে। তুলে এনেছে মুসলিমদের আমেরিকা, আমাদের গৌরবদীপ্ত অতীত। নানান তথ্য-উপাত্তে সন্নিবেশিত হয়েছে আমেরিকা : মুসলিমদের আবিষ্কার বইটি।

110

You Save TK. 50 (31%)

আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার (হার্ডকভার)

Share This Book:

ক্যাশ অন ডেলিভারী

৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন

ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু

Description

ইসলাম-ফোবিয়া যখন আমেরিকায় মুসলিমদের উপস্থিতিকে হুমকি হিসেবে দেখায় আর পামেলা গেলারদের স্লোগান হয়—আমেরিকা থেকে মুসলিম খেদাও, তখন আমেরিকায় মুসলিমদের শিকড় সন্ধান করতেই হয়। অভিবাসীদের দেশ আমেরিকায় মুসলিম-শিকড় অনেক গভীরে। ইউরোপীয়রা আমেরিকায় আসে গণহত্যা, দখল আর মহামারি নিয়ে। মুসলিমরা এসেছিল তাদের আগে এবং নিয়ে এসেছিল শান্তি, মহত্ত্ব ও সম্প্রীতি। তারা আমেরিকা আবিষ্কার করেছিল কলম্বাসের অনেক আগে।

আমরা যখন বলি আমেরিকা : মুসলিমদের আবিষ্কার, তখন মুসলিমদের আগে আমেরিকায় আগত বিভিন্ন জাতির অস্তিত্বকে ভুলে যাই না। তারা এসেছিল এবং হারিয়ে ফেলেছিল বাইরের পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ। মুসলিমরা সৃষ্টি করেন সামুদ্রিক যোগাযোগ-রোড। রচনা করেন বিভিন্ন ম্যাপ ও পথের নির্দেশনা। কলম্বাস সে রোড দিয়েই ভারতে যেতে চেয়ে পৌঁছে যান আমেরিকায়। তার চেতনায় লুকানো ছিল খ্রিস্ট নৌ-ক্রুসেড।

পশ্চিমা ইতিহাস কলম্বাসের যাত্রাকে গ্রাহ্য করেছে, মুসলিমদের আবিষ্কারকে চেপে গিয়েছে বেমালুম। এ বই গোপন সেই ইতিহাসকে সামনে নিয়ে আসার প্রয়াস। নৌ-ক্রুসেড এবং আমেরিকায় এর নির্মমতার দিকেও চোখ রেখেছে বইটি। নিয়ে এসেছে আমেরিকায় মুসলমানদের হাজার বছরের কালপঞ্জি।

মূল্ প্রতিপাদ্য :
ক. আমেরিকা আবিষ্কারক বলে পরিচিত কলম্বাসের পর্যালোচনা।
খ. ইউরোপের নৌ-ক্রুসেড ও মুসলিম বিশ্বে তার ভয়াবহ প্রভাব।
গ. নৌ-ক্রুসেডার কলম্বাস, ভাস্কো দা গামা, আল বুকার্কসহ ইতিহাসের বিখ্যাত নৌ-অভিযাত্রীদের দস্যুতা, গণহত্যা ও মুসলিম নিধনের ইতিবৃত্ত। পশ্চিমা ইতিহাসের অসারতা স্পষ্টকরণ।
ঘ. কলম্বাসের আগে মুসলিমদের আমেরিকা আবিষ্কারের অভিযানসমূহের অজানা ইতিহাস।
ঙ. স্পেন থেকে মুসলিম অভিযাত্রীদের আমেরিকা আবিষ্কারের ঐতিহাসিক প্রমাণ।
চ. আফ্রিকা থেকে মুসলিম অভিযাত্রীদের আমেরিকা আবিষ্কারের ঐতিহাসিক প্রমাণ।
ছ. চীন থেকে মুসলিম অভিযাত্রীদের আমেরিকা আবিষ্কারের ঐতিহাসিক প্রমাণ।
জ. জাভা থেকে মুসলিম অভিযাত্রীদের আমেরিকা আবিষ্কারের ঐতিহাসিক প্রমাণ।
ঝ. মুসলিম ভূগোলবিদদের আমেরিকা বিষয়ক তথ্যের পর্যালোচনা।
ঞ. কলম্বাস কীভাবে মুসলিমদের কাছে ঋণী, এর ইউরোপীয় স্বীকারোক্তিসমূহ।
ট. কলম্বাসের আগে আমেরিকায় মুসলিম সভ্যতার প্রামাণ্যতা।
ঠ. আমেরিকায় মুসলিম সভ্যতা ধ্বংসে কলম্বাসের বর্বরতা।
ড. আমেরিকার ভাষা, ভূগোল, সংস্কৃতি ও আদিবাসীদের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যে মুসলিম প্রভাব।
ঢ. প্রমাণ করা হয়েছে, হাজার বছর আগে আমেরিকায় ছিল মাদরাসা, মসজিদ, মক্কা-মদিনা নামীয় শহর। যা এখনো বিদ্যমান আছে আমেরিকায়। বিল গেটসসহ বহু বিখ্যাত আমেরিকানের জন্ম মদিনায়।
ণ. খ্রিস্টান আমেরিকায় পাওয়া গেছে আটশ বছর আগের ‘কুফি’ ক্যালিগ্রাফিতে রচিত কুরআনের আয়াত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম।

Author

Author

মুসা আল হাফিজ

Reviews (2)

2 reviews for আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার (হার্ডকভার)

  1. Muhammad Tamimul Ihsan

    || বুক রিভিউ ||

    বইয়ের নাম: “আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার”
    লেখক: মুসা আল হাফিজ
    বিষয়: গবেষনাধর্মী ইতিহাস
    প্রকাশক: কালান্তর প্রকাশনী
    মুদ্রিত মূল্য: ২০০/-
    প্রকাশকাল: এপ্রিল ২০১৭

    > ১৪৯২ সাল, অক্টোবরের ১২ তারিখ,শুক্রবার সকাল।কলম্বাস এসে নামলেন বাহামা দ্বীপপুঞ্জের শান্ত রৌদ্রময় বালুময় উপকূলীয় এক দ্বীপে।একই বছরের ২রা জানুয়ারি যিনি ছিলেন ফার্ডিন্যান্ড ও ইসাবেলার ক্রুসেডার বাহিনীর একজন অনুগত সৈনিক। ২রা জানুয়ারি মুসলিম শাসিত স্পেনের পতনের পর কলম্বাসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের পালা। অনেক কষ্টে রাজা ও রাণীকে বুঝাতে সক্ষম হন তিনি। এর আগে হাজারবার তাদের কাছে ধরণা দিলেও পাননি কোনো পাত্তা। কিন্তু সময় বদলেছে। ক্রুসেডার পাদ্রীরাও চাচ্ছিলেন নতুন ভূমিতে অভিযান করার কথা।যাতে তাদের ঈশ্বরের পবিত্র নাম ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তাই অভিযানের অভিপ্রায়েই নতুন ভূমি জয় করতে কলম্বাস রওয়ানা হয়েছিলেন আটলান্টিকের পশ্চিম দিক ধরে। কারণ পূর্ব দিকের পথ ততদিনে আবিষ্কৃত হয়ে গিয়েছিল। আর তাই আটলান্টিকের পশ্চিম তীর ধরে ছুটছিলেন নতুন ভূমি জয়ের নেশায়। বহু বিপদসংকুল পথ অতিক্রম করে পশ্চিম তীর ধরে ছুটতে ছুটতে দেখা পান এক বালুময় ভূমির।

    পাশ্চাত্যের ইতিহাস তাকে এই ভূমির আবিস্কারক বললেও এর পিছনে রয়ে যায় এক সূক্ষ্ম কুটচাল। কারণ বালুময় এই প্রান্তে আগেই এসে বসবাস করছিলো মানুষরা। কলম্বাসের ভাষায় “রেড ইন্ডিয়ান”। কিন্তু তারা তো আর আকাশ থেকে আসেনি। কারা ছিলো এরা,কী এদের পরিচয়? এরকম রোমাঞ্চকর গবেষণাধর্মী এক ইতিহাস নিয়েই লেখা ” আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার” বইটি। পাশ্চাত্যের ইতিহাস যখন কলম্বাসের যাত্রাকে গ্রাহ্য করে মুসলিমদের আবিষ্কারকে চেপে যায় তখন পাশ্চাত্যের চাকে ঢিল ছোড়া কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।আর তাই উস্তায “মূসা আল হাফিজ” রচনা করেছেন ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গবেষণাধর্মী এই বই। যা ইতিহাসের আঁধারে থাকা প্রত্যেকটা পাঠককে আলোর পথ দেখতে বাধ্য করবে। ঘুরে আসা যাক ইতিহাসের এই তরীতে-

    > বইটির লেখক উস্তায ” মূসা আল হাফিজ “। জন্ম সিলেটের বিশ্বনাথে। যার চেতনালোক সম্পর্কে বলতে গেলে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের এক লেখায়ই যথেষ্ট। যা বইটির ফ্লাপে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। নিরন্তর গবেষণা আর পরিশ্রমের ফল বক্ষমান এই গ্রন্থটি। এছাড়াও “শতাব্দীর চিঠি”, “সহস্রাব্দের ঋণ” সহ আরোও অসংখ্য জনপ্রিয় গবেষণাধর্মী বইয়ের গ্রন্থপ্রণেতা তিনি। বাস্তবেই তার বই থেকে পাঠক কিছু নিতে পারে। নিজের বিবেক,নিজের সুপ্ত বোধকে জাগানোর জন্য তাঁর বই এক কথায় অসাধারণ।

    > একশ বারো পৃষ্ঠার এই বইটিকে ভাগ করা হয়েছে মোট সাতটি অধ্যায়ে। যার প্রতিটি অধ্যায়ে পাঠক দেখতে পাবেন নিরন্তর এক গবেষণার ছাপ। এত তথ্য আর এত রেফারেন্সে ভরপুর বইটিকে রিভার্স করা দুঃসাধ্য এক ব্যাপার।

    • বইটির প্রথম অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে,কলম্বাসের আমেরিকা অভিযান সম্পর্কে। যেখানে মূলত উঠে এসেছে কীভাবে কলম্বাস আটলান্টিকের পশ্চিম তীর ধরে ভারত যাওয়ার অভিপ্রায় নিয়ে যাত্রা শুরু করে আমেরিকা গিয়ে পৌঁছালেন, কলম্বাস কীভাবে রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও রানী ইসাবেলাকে এই অভিযানের ব্যাপারে রাজি করালেন,কী উদ্দেশ্য নিয়ে আটলান্টিকের পশ্চিম তীর ধরে এত বিপদ সংকুল পথ ধরে তিনি গিয়েছিলেন সেই ভূমিতে? এছাড়াও এর পূর্বে কলম্বাস কোথায় ছিলেন,কার অধীনে কাজ করতেন এবং রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও রাণী ইসাবেলার স্পেনের ধ্বংস চিত্রের একটুকরো চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে অধ্যায়টিতে।

    • দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে অভিযানের প্রেরণা নিয়ে। যেখানে শুধু কলম্বাসের আলোচনায়ই করা হয়নি, পুরো চৌদ্দ থেকে আঠারো শতকের পর্তুগিজ ও ইউরোপীয় নৌ-ক্রুসেডারদের ইতিহাসও মোটামুটি চলে এসেছে। মূলত এই অভিযানগুলো ছিলো ক্রুসেড যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণার ফল। কারণ আরব এবং তুর্কীদের চাপে যখন স্থলপথে ক্রুসেডাররা কিছুই করতে পারছিলো না তখন হানা দেয় নৌ পথে। আমাদের এই ভারতবর্ষেও পর্তুগিজ নৌ-ক্রুসেডারদের যে দৌরাত্ম্য ছিলো তা ইতিহাস খুব ভালো করেই বলে দেয়। মূলত বিভিন্ন দেশে নৌ-ক্রুসেডারদের এইসব অভিযানের পিছনে কোন প্রেরণা কাজ করছিলো তাই উঠে এসেছে এই অধ্যায়টিতে। যেখানে স্বয়ং কলম্বাস কোন প্রেরণা নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিলেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে অধ্যায়টিতে।

    • তৃতীয় অধ্যায়, যেখানে আলোচনা করা হয়েছে ভৌগলিক জ্ঞান বা মতবাদ নিয়ে অর্থাৎ মুসলিমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে যেসব অবদান রেখেছে যা এই নৌ-ক্রুসেডারদের চলার সঙ্গী হয়েছে এবং এর প্রভাব কীভাবে তাদের উপর পড়েছে এই নিয়েই রচিত এই অধ্যায়টি। মূসা আল খাওয়ারিজমী ভৌগোলিক সূত্র, ইদ্রিসির মানচিত্র,ভূমধ্যসাগরের সামুদ্রিক চার্ট,আরবদের কম্পাস যা ছিলো নাবিকদের নিত্য সঙ্গী। মুসলিমদের আবিস্কার ব্যবহার করে কীভাবে তারা অগ্রসর হচ্ছিলো,কলম্বাস কীভাবে মুসলিম চিন্তাধারায় তাড়িত হয়ে এই অভিযান পরিচালনা করেছিলেন এ নিয়ে এক বিস্তর আলোচনা অধ্যায়টিতে।

    • চতুর্থ অধ্যায়টিতে আলোচনা করা হয়েছে কলম্বাসের আগে আমেরিকায় মুসলিম আগমন নিয়ে। কলম্বাসের আগমনের ৩০০ বছর পূর্বে আরবরা এই অঞ্চলে উপনীত হন। এছাড়াও কলম্বাসের এই সাফল্যের পিছনে যে মরিস্কু মুসলিমরা সহায়তা করেছিলেন। কারণ এই মরিস্কু নাবিকরা আটলান্টিক পারি দেয়ায় ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার লালন করছিলেন। এছাড়াও লেখক অধ্যায়টিতে বহু তথ্য,ঐতিহাসিক সূত্র তুলে ধরেছেন যা দ্বারা পরিপূর্ণ স্পষ্ট হওয়া যায় যে, কলম্বাসের আগে মুসলিমরাই সর্বপ্রথম আমেরিকার মাটিতে পা ফেলেছিলো।

    • পঞ্চম অধ্যায়টিতে আলোচনা করা হয়েছে আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার সম্পর্কিত আলোচনা নিয়ে। যেখানে মূলত আমেরিকা যে মুসলিমদের আবিষ্কার এটাই তথ্য, উপাত্ত ও রেফারেন্সের মাধ্যমে ভালো করে সাজানো হয়েছে।এ অধ্যায়টির তথ্য,উপাত্ত,রেফারেন্স সাধারণ পাঠকের মাথা ঘুরিয়ে দিতে বাধ্য।

    • “আমেরিকা মুসলিমদের শিকড়” এভাবেই চমকপ্রদ নাম দিয়ে শুরু করা হয়েছে ষষ্ঠ অধ্যায়। যেখানে আলোচনায় এসেছে আমেরিকায় মুসলিমদের বিভিন্ন নিদর্শন সম্পর্কে। ড.বেরি ফিলের গবেষণায় উঠে আসা আমেরিকায় মুসলিমদের অবস্থান সম্পর্কে এক বিস্তর আলোচনা উঠে এসেছে অধ্যায়টিতে।

    • সপ্তম অধ্যায় মূলত আমেরিকায় ইসলামের সংক্ষিপ্ত কালপঞ্জি নিয়ে। যেখানে ৯৪০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় ইসলাম ও মুসলিমদের ইতিহাস নিয়েই এই সংক্ষিপ্ত দিনপঞ্জি।

    > কারা পড়বেন এবং কেন পড়বেন…??বইটি তারাই পরবেন যারা ইতিহাসের অন্ধকার দরজায় কুঠার আঘাত হেনে আলোর পথে ফিরে আসতে চান। পাশ্চাত্যের পক্ষপাতিত্বমূলক ইতিহাসকে ছুঁড়ে ফেলে সত্য জানতে চান তাদের জন্যই এই বইটি। ব্যক্তিগতভাবে ইতিহাসের উপর এত গবেষণাধর্মী বই খুবই কম পড়া হয়েছে। এত তথ্য, রেফারেন্স সাধারণত সাইন্স বা ধর্মতত্ত্ব সংশ্লিষ্ট বইগুলোর মধ্যে পাওয়া যায়। ইতিহাসের মধ্যে কালে ভদ্রে এরকম বই পাওয়া যায়। এককথায় মাস্টারপিস একটা বই।

    মাআসসালাম……..

    ★ ব্যক্তিগত রেটিং: ৫/৫

    ▪︎রিভিউয়ার : মুহাম্মাদ তামিমুল ইহসান

  2. Naimur_Naahid

    ১৪৯২ সাল।

    পুরো স্পেন তথা মুসলিম আন্দালুসিয়া তখন ফার্ডিনান্ড এবং ইসাবেলার দখলে। ইতালির জেনোভা শহরের তাঁতী পরিবারে জন্ম নেওয়া দুঃসাহসী কলম্বাস এবার পেয়ে গেল একটি সুযোগ। হাজির হলেন রানী ইসাবেলার দরবারে। রানী আর কীভাবে তাকে না করেন! সে যে মহান প্রভু যীশুর বাণী নিয়ে ভারত যেতে চাচ্ছে। ভারতের মানুষদের একটু সভ্য বানাতে চায়।
    অবশেষে ৯০ জন সঙ্গী এবং তিনটি জাহাজ দিয়ে কলম্বাসকে বলে দিলেন, যাও বাছা যাও! অবশেষে দুই মাস পর কলম্বাস ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা গিয়ে পৌঁছালেন বাহামা দ্বীপপুঞ্জের সান সালভাদর দ্বীপে। তারপর পুরো আমেরিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ চষে বেড়িয়ে কলম্বাস ফিরে এলেন স্পেনে। এভাবেই আবিষ্কার হলো আমেরিকা।

    এই হলো আমাদের আমেরিকা আবিষ্কার সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণা। কিন্তু এটা কি সত্য? না, মোটেই না। ইতিহাস থেকে যতদূর জানা যায় সর্বপ্রথম হাজার হাজার বছর আগে বরফ যুগে মঙ্গোলিয়া থেকে কয়েকটি নরগোষ্ঠী রাশিয়ার সাইবেরিয়া হয়ে তৎকালে বিদ্যমান বরফের সংযোগ রাস্তা হয়ে হেঁটে আলাস্কায় পৌঁছে গিয়েছিল। চীনারা গিয়েছিল ৫ হাজার বছর আগে। এগুলো তো সেই আদিম কালের কথা! আমরা সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে ফিরে আসি।
    ইউরোপ তখন নানান কুসংস্কার এবং স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে ভরপুর। মানবতার মুক্তির দিশারী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের ১০০ বছরও পার হয়নি। সাহাবি উকবাহ নাফে’ রাদিয়াল্লাহু আনহু আটলান্টিক পর্যন্ত তাওহীদের বাণী প্রচার করে ফিরে আসলেন। তার ঠিক বছরখানেক পর আব্দুল্লাহ এবং মোবারক নামের দুইজন আরবীয় যুবক আটলান্টিকের পশ্চিমে ভ্রমণ করতে গিয়ে উলঙ্গ মানুষের এক দ্বীপে আশ্রয় পায়। সেই তো শুরু। তার পর আমরা একে একে কাজী আবু আমির হামদানি, আলখাল্লাল, আল-বিরুনী দের কিতাবে আমেরিকার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাই। এছাড়াও কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের ৫০০ বছর আগেই ইদ্রিসির মানচিত্রে আমরা দেখতে পাই আমেরিকার স্পষ্ট অবস্থান।
    এছাড়াও আফ্রিকান মুসলিম রাজা বিখ্যাত মানসা মুসার বড় ভাই মানসা আবু বাকরী ২০০ জাহাজ নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আমেরিকায়। এরকম হাজারটা উদাহরণ রয়েছে কলম্বাসের আগে মুসলিমদের আমেরিকা আবিষ্কারের কথা।
    হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (খ্রিস্টান) অধ্যাপক ডক্টর বেরিফিল একটি প্রতিবেদনে লিখেন, “হিজরী প্রথম শতকে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আরবীয়রা আমেরিকার মাটিতে কেবল পা রাখেননি; দীর্ঘকাল আধিপত্যও বিস্তার করেছিল।”
    এছাড়াও আমেরিকায় অনেক প্রাচীন পাথর আবিষ্কৃত হয়েছে যেখানে আরবিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে আল্লাহ, মুহাম্মদ ইত্যাদি শব্দাবলী। তাছাড়াও পাওয়া গিয়েছে পুরাতন আফ্রিকার মুসলিম মানুষের কঙ্কাল। এমনকি কমপক্ষে দশটি স্থানে মাদ্রাসার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যেগুলো নির্মিত হয়েছিল ৭০০ থেকে ৮০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।

    এছাড়াও কলম্বাস খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের বিপরীতে গিয়ে মুসলিম মনীষীদের কিতাবে বলা পৃথিবীকে গোল ধরে নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আটলান্টিকের পশ্চিমে। সাহায্য নিয়েছিলেন মুসলিমদের তৈরি কম্পাসের।

    এতকিছুর পরেও মুসলিমরা ইতিহাসের অন্তরালে কেন? কারণ আমরা ইতিহাস কে আঁকড়ে ধরতে পারি না, ইতিহাসের দেখানো পথে কাজ করতে পারি না, সত্য ইতিহাস ছড়িয়ে দিতেই আমাদের যত অনীহা!

    আমেরিকায় মুসলিমদের প্রথম প্রবেশ, আমেরিকা গঠনে মুসলিমদের অবদান, কলম্বাসের ভুলে আমেরিকায় পৌঁছে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে ‘আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার’ বইয়ে অত্যন্ত যৌক্তিক, তথ্যমূলক, তাত্ত্বিক আলোচনা করেছেন শাইখ মুসা আল হাফিজ। ইতিহাস থেকে বের করে এনেছেন সত্য নির্যাস। তার লেখার সৌন্দর্য, চমৎকার ভাষাশৈলী যেমন আমাকে আনন্দিত করেছে, রোমান্স দিয়েছে ঠিক তেমনি মুসলিমদের ইতিহাসের পিছনে পড়ে থাকা আমাকে মর্মাহত করেছে।

    বইটি মূলত সাতটি পাঠে বিভক্ত। প্রত্যেকটি পাঠ শেষ করে পাঠক যেন ব্যাকুল ভাবে আরো জানার জন্য মুখিয়ে থাকবে! পাঠগুলো হলোঃ
    ১! অভিযান
    ২! অভিযানের প্রেরণা
    ৩! ভৌগলিক জ্ঞান
    ৪! কলম্বাসের আগে আমেরিকায় মুসলমান
    ৫! আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার
    ৬! আমেরিকায় মুসলিমদের শিকড়
    ৭! আমেরিকায় ইসলাম: সংক্ষিপ্ত কালপঞ্জি

    ••••••••••••••••••••••••••••••••••
    বইঃ আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার
    লেখকঃ শাইখ মুসা আল হাফিজ
    পৃষ্ঠাঃ ১১২
    মুদ্রিত মূল্যঃ ১৪০ টাকা।
    ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪.৬/৫

    (বিঃদ্রঃ বইটি পড়ার সময় যদি সাথে বিশ্ব মানচিত্র নিয়ে বসেন তাহলে ভৌগোলিক বিবরণ গুলো বুঝতে সুবিধা হবে।)

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart

Sign in

No account yet?

ধন্যবাদ, আপনার প্রি-অর্ডারটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আপনার যে কোন প্রশ্ন অথবা অর্ডারে কোন পরিবর্তনের জন্য ০১৮৪৪২১৮৯৪৪ নাম্বারে কল করুন ।